টলিউডের পরিচিত মুখ রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন যেন এখন ধারাবাহিককেও হার মানায়! অভিনেত্রী ও তার পরিচালক স্বামী অরিন্দম চক্রবর্তীর দাম্পত্য কলহ এখন সামাজিক মাধ্যম জুড়ে প্রধান ট্রেন্ড। পরকীয়া, সহবাস, খোরপোষ, মানসিক নির্যাতন— একে অপরের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘতর!
গতবছর স্বামী অরিন্দম চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য কলহের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। এমনকী কয়েকদিন আগে স্বামীর পরকীয়া হাতেনাতে ধরেছেন রিয়া। সেই মহিলার নামও প্রকাশ্যে এনেছেন। এরপরই তাঁকে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে হয় বলে অভিযোগ অভিনেত্রীর। মানহানি মামলা করা হয়েছে রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তবে রিয়াও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিছুদিন আগেই রিয়া গঙ্গোপাধ্যায় একটি ফেসবুক লাইভে বিস্ফোরক দাবি করেন, তাঁর স্বামী নিজের বাড়িতেই অন্য এক মহিলার সঙ্গে সহবাস করছেন। পাশাপাশি, বিগত তিন বছর ধরে তিনি মানসিক নির্যাতনের শিকার। রিয়ার পর এবার লাইভে এলেন অরিন্দম চক্রবর্তী। সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, যদি রিয়া প্রমাণ করতে পারেন তিনি অন্য মহিলার সঙ্গে সহবাস করছেন, তাহলে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দেবেন! শুধু তাই নয়, রিয়ার বিরুদ্ধে অরিন্দমের অভিযোগ, তার স্ত্রী নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে তার মাকে অসুস্থ করেছেন! এমনকী পাড়ার লোকের সামনে চিৎকার, তার বাবার ওপর হাত তোলার মতো আচরণও করেছেন রিয়া। অরিন্দম আরও দাবি করেন, তিনি প্রতি মাসে রিয়াকে ৭০ হাজার টাকা দেন। তা সত্ত্বেও আইনের সাহায্যে রিয়া আরও ৬০ হাজার টাকার খোরপোষ দাবি করেছেন, যা দিতে তিনি একেবারেই রাজি নন।
ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বামীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে ফের লাইভে এলেন রিয়া। তাঁর দাবি, স্বামীর দেওয়া ৭০ হাজার টাকার পুরোটাই সন্তানের জন্য খরচ হয়। স্কুল থেকে টিউশন ফি কিংবা ছেলে-মেয়েদের জন্য ৭০ হাজার টাকার কোথায় কী খরচ হয় তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দেন অভিনেত্রী। তবে এই টাকা থেকে নিজের জন্য কিছুই খরচ করেন না তিনি। উল্টে, ফ্ল্যাটের ইলেকট্রিক বিল, রান্নার গ্যাস, পরিচারিকার বেতন সহ সংসার ও সন্তানের দেখভালের আনুষঙ্গিক সমস্ত খরচ তিনি নিজেই দেন বলে জানিয়েছেন রিয়া।
অভিনেত্রীর কথায়, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের বিষয়টি তিনি প্রকাশ্যে আনতে চাননি। না চাইতেও একে অপরকে 'কাদা ছোড়াছুড়ি' থেকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ আসতেই থেকেছে। যার জন্য স্বামীকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রিয়া। তাঁর মতে, অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক যদি স্বামী নিজে তাঁকে জানাতেন তাহলে বিষয়টি এতটা জলঘোলা হত না। একইসঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্কের এই পরিণতি সন্তানদের উপরও প্রভাব ফেলছে বলে সমাজ মাধ্যমে এসে দুঃখ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী।

রিয়া ও অরিন্দম, এই মুহূর্তে দুজনেই আইনি পথে এগোচ্ছেন। দু’জনেই দাবি করেছেন, তাঁদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে যা আদালতে পেশ করা হয়েছে। এখন দেখার, এই বিতণ্ডার শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। টলিপাড়া জুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন— কে বলছেন সত্যি? রিয়া না অরিন্দম? সম্পর্কের ভাঙন যেমন ব্যক্তিগত, তেমনই এখন সেটি পেয়ে গেছে জনজীবনের রূপ। সময় বলবে, কোন প্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসবে “আসল সত্যি!”
