‘বিগ বস ১৯’এর ট্রফি জেতেননি ঠিকই। তবে দর্শকমহলে নিঃসন্দেহে এই সিজনের সবচেয়ে বড় সেনসেশন হয়ে উঠেছেন তানিয়া মিত্তল। শো জুড়ে নিজের বিলাসবহুল জীবনযাপন আর বিপুল সম্পদের দাবি নিয়ে বারবার আলোচনায় থেকেছেন তিনি। সেই কারণেই দর্শকের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন অন্যতম বিনোদনমূলক প্রতিযোগী। কখনও সরলভাবে বলে বসা স্নান করতে যে এত কিছু লাগে, তা তিনি জানতেন না। আবার কখনও ঘর মোছা–ঝাঁট দেওয়া দেখে বাবা-মা কতটা কষ্ট পাবেন, সেই দুশ্চিন্তা—তানিয়ার এমন নাটকীয় সংলাপই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমে পরিণত হয়। বলা যায়, এই কৌশল বেশ কাজে লেগেছে।
‘বিগ বস’-এর ঘর থেকে বেরনোর পর খুব বেশি সময় নেননি তানিয়া। ইতিমধ্যেই তিনি পেয়ে গিয়েছেন অভিনয়ের প্রথম সুযোগ এবং একটি বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। ইনফ্লুয়েন্সার থেকে রিয়্যালিটি শো তারকায় পরিণত হওয়া তানিয়া সম্প্রতি একটি স্যালোঁ সার্ভিস ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে ধরা দিয়েছেন। সেখানে ব্র্যান্ডের নতুন কোরিয়ান বিউটি সার্ভিসের প্রচার করতে দেখা যায় তাঁকে। বিজ্ঞাপনে গোলাপি শাড়িতে।
বিজ্ঞাপনেও নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ‘বাড়াবাড়ি’ দাবি করতে দেখা যায় তাঁকে। এক দৃশ্যে তানিয়া বন্ধুকে বলেন, “আমার কথা শোনো। আমি প্রতি সপ্তাহে গোয়ালিয়র থেকে দিল্লি, সেখান থেকে সরাসরি কোরিয়া উড়ে যাই কোরিয়ান বিউটি সার্ভিস করাতে। আমার জেল্লাটা দেখো।” বন্ধু অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, “তুমি একটু বেশি বাড়িয়ে বলছ না?”
তাতে একেবারেই বিচলিত না হয়ে তানিয়ার জবাব, “এটা বাড়াবাড়ি নয়, এটাই আমার বেসিক। কোরিয়াতে আমার একাধিক বিজনেস সেটআপ আছে, আর কোরিয়ানরা আমার ফ্যান।”
এরপরই আসে আসল টুইস্ট। বন্ধু তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে সেই সার্ভিসের অ্যাপ খুলে আসল সত্যি সামনে আনে। তখনই তানিয়া কথার মোড় ঘুরিয়ে বলেন, তিনি এটাই বলতে চেয়েছিলেন। সেই অ্যাপের মাধ্যমে নাকি বাড়িতেই কোরিয়ান বিউটি সার্ভিস নেন। অর্থাৎ ‘বিগ বস’-এ তানিয়ার অতিরঞ্জিত কথাই এখন তার তুরুপের তাস। তার সুবাদেই কাজ পাচ্ছেন তিনি।
এই বিজ্ঞাপন প্রকাশের পর নেটমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। অনেকেই ‘বিগ বস’-এর পর প্রথম বিজ্ঞাপন পাওয়ায় তানিয়াকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ মনে করেছেন, অভিনয়ে তাঁর আরও পরিমার্জনের প্রয়োজন। এক নেটিজেনের মন্তব্য, ‘একটু ওভারঅ্যাক্টিং লাগছে।’
এর আগে বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের ক্যামেরার নেপথ্যের একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন তানিয়া। সেখানে এক সদস্য তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘এটাই আপনার প্রথম বিজ্ঞাপন। কেমন লাগছে?’ উত্তরে তানিয়া বলেন, ‘আমি ভীষণ এক্সাইটেড। এত দ্রুত মানুষ আমার কাছে আসবে, ভাবতেই পারিনি। বিগ বসের ঘর থেকে বেরনোর মাত্র তিন দিনের মধ্যেই শুটিং শুরু হয়ে গেল। মুম্বইয়ে আমার প্রথম ডিরেক্টর পেয়েছি, এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে।’
উল্লেখ্য, বিগ বস ১৯–এ তানিয়া মিত্তল তৃতীয় রানার-আপ হয়েছে। এই সিজনের বিজয়ী হন গৌরব খান্না। শোনা যাচ্ছে, শো-য়ে তানিয়ার জনপ্রিয়তা আরও কাজের দরজা খুলে দিতে পারে। এক পর্বে অতিথি হিসাবে আসা প্রযোজক একতা কাপুর নাকি শো শেষে তানিয়াকে দেখা করার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন এবং ভবিষ্যতে কাজের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সেই বিষয়ে যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।
