২৪ আগস্ট অভিনেত্রী-পরিচালক তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায় ইনস্টাগ্রামে জানান, আট মাস আগে তাঁর স্টেজ ৪ অলিগো মেটাস্ট্যাটিক ক্যানসার ধরা পড়েছে। পোস্টে তিনি শেভ করা মাথার একটি ছবি শেয়ার করেন। আরেকটি গ্রুপ ছবিতে বিদ্যা বালন, শাবানা আজমি, ঋচা চাড্ডা, তনভী আজমি-সহ তাঁর ‘গার্ল গ্যাং’-এর প্রশংসা করেন। টেলিভিশনের তারকা হিনা খান যদিও সেই ছবিতে ছিলেন না, তবুও তিনিও তন্নিষ্ঠার যাত্রাপথে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। জীবনের কঠিন এই লড়াইয়ে, যখন দু’জনেই একই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তখন তাঁদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।
এক সাক্ষাৎকারে তন্নিষ্ঠা খোলাখুলি জানান, হিনার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ, মহিলা বন্ধুদের দেওয়া মানসিক শক্তি তাঁকে কতটা সাহায্য করছে। এবং কীভাবে তাঁর ৭০ বছরের মা এবং ন’বছরের মেয়ে বন্ধুর যাত্রাপথের সঙ্গী হয়ে উঠেছেন।
হিনা কি তন্নিষ্ঠার পূর্ব পরিচিত? তিনি বলেন, “আমার চিকিৎসার পুরো সময় জুড়েই আমাদের কথা হয়েছে। হিনা একেবারেই অসাধারণ। আমি ওকে ভীষণ ভালোবাসি। ও সত্যিই দারুণ... আমাদের দু’জনের জীবনে এত কিছু ঘটার আগেই আমরা একে অপরকে চিনতাম।”
তন্নিষ্ঠা আরও বলেন, “কিন্তু এই অভিজ্ঞতা আমাদের আরও কাছাকাছি এনেছে, কারণ আমরা প্রায় একই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। হিনা নিঃসন্দেহে সেই মানুষ, যার সঙ্গে আমি নিয়মিত কথা বলি। ওর সঙ্গে আমার একেবারে আলাদা মাত্রার এক বন্ধন তৈরি হয়েছে। কারণ আমরা একে অপরকে সত্যিই বুঝতে পারি।”
তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর হিনা তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে অভিনেত্রীর জন্য একটি বার্তা শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, “তুমি এক সাহসী মানুষ। তুমি একেবারেই অবিশ্বাস্য। আমি কিছু বেশি বলছি না, কারণ আমরা এ নিয়ে বহুবার অনেক কথা বলেছি। শুধু মনে রেখো, আমি সব সময় তোমার পাশে আছি—ভালবাসা পাঠাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, হিনা বর্তমানে স্টেজ ৩ স্তন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন। গত বছর এক বিস্তারিত ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে তিনি তাঁর অসুস্থতার কথা প্রকাশ করেছিলেন।
হিনার পাশাপাশি তন্নিষ্ঠার সেই ‘গার্ল গ্যাং’-ও তাঁকে এই লড়াইয়ে কখনও একা হতে দেয়নি। গণেশ চতুর্থীর দিন তিনি অভিনেত্রী দিব্যা দত্ত এবং তানভি আজমির বাড়িতে গিয়ে উৎসব পালন করেন। পরে তিনি উর্মিলা মাতন্ডকর, তানভি-সহ আরও অনেকের সঙ্গে ছবি শেয়ার করেন ইনস্টাগ্রামে।
বন্ধুদের দৃঢ় সমর্থনের বিষয়ে তন্নিষ্ঠা বললেন, ““ওরা পালা করে হাসপাতালে এসেছে। শাবানাজি বহুবার এসেছেন। তানভিA এসেছে। উর্মিলা, দিব্যাও তা-ই। সকলে নিয়মিত আসছিল।”
তিনি আরও যোগ করেন, “দীপ্তি গুপ্ত, যিনি একজন সুপরিচিত চিত্রগ্রাহক, তিনি ছিলেন ভীষণ শক্ত ঢালের মতো। অনেকবার এসেছেন। সঞ্জয় সূরী, আমার খুব প্রিয় বন্ধু (২০১৪ সালে আমরা সমালোচক-প্রশংসিত চৌরঙ্গা ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছি), তিনিও এসেছেন। তিনি নিজেও তাঁর মায়ের কেয়ারগিভার ছিলেন। আরও অনেকেই পালা করে আমার পাশে থেকেছেন। আমি কোনও দিন একা অনুভব করিনি। প্রতিটি কেমো সাইকেলে দু’তিন জন করে আসতেন, নিজেদের মধ্যে সময় ভাগ করে নিতেন। আমিই তো কাউকে কিছু বলিনি, ওরা নিজেরাই দল বেঁধে এসে পাশে থেকেছে। সেই অনুভূতিটা ছিল অসাধারণ।”
