গান তাঁর পেশা, কিন্তু মানবিকতা তাঁর ধর্ম। বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা পলক মুচ্ছল শুধু ‘মেরি আশিকি’, ‘কৌন তুঝে’ বা ‘প্রেম রতন ধন পায়ো’-র মতো গানেই নয়, এবার ইতিহাস গড়লেন এক অসাধারণ মানবিক কাজের জন্য। ইন্দোরের এই সঙ্গীতশিল্পীর নাম এখন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ও লিমকা বুক অফ রেকর্ডস-এ স্থান পেয়েছে। গানের জন্য নয়, বরং তাঁর অসাধারণ সমাজসেবার জন্য!
পলকের নিজস্ব সংস্থা ‘পলক-পলাশ চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন’ ইতিমধ্যেই ৩,৮০০-রও বেশি অসহায় শিশুর হৃদরোগের অস্ত্রোপচারের খরচ বহন করেছে। ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর এই কাজ বহু পরিবারকে দিয়েছে নতুন জীবন। সবকিছুর শুরুটা কিন্তু হয়েছিল ছোটবেলায়, এক সাধারণ ট্রেন যাত্রায়। পলক একবার দেখেছিলেন কিছু বাচ্চা ট্রেনে গান গেয়ে ভিক্ষে করছে। সেই মুহূর্তে নিজের মনে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, “একদিন আমি ওদের সাহায্য করব।” বড় হয়ে তিনি সেই প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রেখেছেন। তাঁর প্রতিটি কনসার্টের উপার্জন, এমনকী নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয়ও তিনি দান করেন হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের অস্ত্রোপচারের জন্য।
তাঁর এই মানবিকতা কেবল শিশুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কাশ্মীরের কার্গিল যুদ্ধের শহিদ পরিবারের পাশে থেকেছেন তিনি, আবার গুজরাত ভূমিকম্পের সময়ে ১০ লক্ষ টাকা দান করেছিলেন ত্রাণ তহবিলে।
গায়িকার পাশে রয়েছেন তাঁর স্বামী তথা সুরকার মিথুন। তাঁদের এই দম্পতি শুধু সঙ্গীতে নয়, সমাজসেবাতেও একে অপরের পরিপূরক। মিথুন একবার বলেছিলেন, “শো না থাকলেও, আয় না থাকলেও একটাও শিশুরও অস্ত্রোপচার বন্ধ হবে না।” এই কথাই যেন তাদের জীবনদর্শনের প্রতীক-সঙ্গীতই তাঁদের উপাসনা, মানবতা তাঁদের মন্ত্র।
আজ যখন পালক মুচ্ছলের নাম বিশ্বরেকর্ডের পাতায়, তখন প্রমাণ পাওয়া গেল সুরের থেকেও শক্তিশালী হতে পারে সহমর্মিতার স্পন্দন।
২০২২ সালে ৪ নভেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন ‘আশিকি ২’ ছবির সুরকার-গায়িকা জুটি। স্বামী-স্ত্রী হয়ে জীবনের নয়া অধ্যায়ে পলক মুচ্ছল ও মিথুন শর্মা। মুম্বইতে বিয়ে হলেও পলক-মিথুনের রিসেপশন হয়েছিলেন ইন্দোরে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চুপিচুপি প্রেম করেছিলেন মিথুন-পলক। শেষমেশ ২০২২ সালে পরিণতি পেয়েছিল তাঁদের প্রেম।
