হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা চলে আসছে।  রণবীর সিংয়ের সাম্প্রতিক মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ধুরন্ধর’  বক্স অফিসে দুর্দান্ত সাফল্য পেলেও তাঁর বিপরীতে ২০ বছরের অভিনেত্রী সারা অর্জুনকে কাস্ট করা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেত্রী শেফালি শাহ। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওয়াক্ত: দ্য রেস অ্যাগেইনস্ট টাইম ’ ছবিতে তিনি নিজের থেকে বয়সে বড় অক্ষয় কুমারের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

শেফালি শাহের মতে, ইন্ডাস্ট্রিতে পুরুষ ও নারী অভিনেতাদের জন্য আলাদা মাপকাঠি আজও রয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “এটা হওয়া উচিত নয়, কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এখও ‘হিরো, হিরোইন, ভিলেন’-এর প্রচলিত ধারণাই চলে। হিরো যে কোনও বয়সের হতে পারেন, কিন্তু নায়িকাকে অবশ্যই ১৮ থেকে ২৫-এর মধ্যে থাকতে হবে। এটাই যেন নিয়ম। নায়িকা বড় হতে পারবে না, তাঁর একটা ‘শেল্ফ লাইফ’ আছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম, যেটা আমার প্রকৃত বয়সের থেকেও অনেক বড়। একজন অভিনেতা হিসাবে আমার কাজই হল বিভিন্ন ধরনের মানুষকে তুলে ধরা, নানা স্তর ও অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তোলা। সেখানে বয়স তো চরিত্রেরই একটা অংশ। কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা এত সহজ নয়।”

শুধু বয়সভিত্তিক বৈষম্য নয়, অভিনেত্রীদের কাজের নির্দিষ্ট সময় নিয়ে চলমান বিতর্কেও লিঙ্গভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন শেফালি। তাঁর কথায়, “আমি নিশ্চিতভাবে জানি, অনেক পুরুষ অভিনেতাই গ্রীষ্মে সন্তানদের ছুটির সময় দু’-তিন মাস কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা স্পষ্টভাবে বলেন, এই সময়টা তাঁরা কাজ করবেন না। পরিবার ও কাজের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য এটা প্রশংসনীয়। কিন্তু এই বিষয়টা কখনও আলোচনায় আসে না। অথচ একজন নারী যখন বলেন যে তিনি নির্দিষ্ট কাজের সময় চান, তখনই সেটা বড় ইস্যু হয়ে যায়।”

এখানেই শেষ নয়। শেফালি  আরও বলেন, “এটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়। কারও ব্যক্তিগত প্রয়োজন বা অনুরোধ থাকতেই পারে। কেউ যদি তাতে রাজি না হন, তাতে কেউ কাউকে জোর করছে না। কেউ তো মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলছে না যে আমাকেই কাস্ট করতে হবে বা আমার শর্ত মানতেই হবে। তাহলে এটা নিয়ে এত আলোচনা কেন? একজন পুরুষ যদি এই কথাটা বলতেন, তাহলে বিষয়টা আলোচনাতেই আসত না।”