ফের বিস্ফোরক মুকেশ খান্না। ফের তাঁর অগ্নিবাণ ধেয়ে এল বলিপাড়ার দিকে। আরও ভাল করে বললে, রণবীর কাপুরের দিকে। বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা মুকেশ খন্না আবারও শিরোনামে—এবং যথারীতি, একেবারে তাঁর চিরপরিচিত অকপট মেজাজে। চার দশকের বেশি সময়ের কেরিয়ারে বহু দাপুটে তারকার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। প্রায়শই সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য করে আলোচনা ও বিতর্কের রাস্তা দেখান তিনি। দাবিও করেন পিলে চমকে দেওয়ার মতো। এবার যেমন তিনি মুখ খুললেন অভিনেতা রণবীর কাপুর এবং রামায়ণ ছবির ব্যাপারে। তাঁর এবারের টার্গেট নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত, ১০০০ কোটির বাজেটের ছবি রামায়ণ এবং ছবির মুখ্যভূমিকায় থাকা রণবীর কাপুর।
সম্প্রতি, দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুকেশ খন্নার স্পষ্ট মন্তব্য—রণবীরের পর্দার রাম অবতারে তিনি সন্দিহান। তাঁর ভাষায়, “আপনারা রামকে গাছে চড়ে তীর ছুড়তে দেখাচ্ছেন। এটা কৃষ্ণ বা অর্জুন করতে পারেন, কিন্তু রাম নয়। যদি রাম সত্যিই যোদ্ধা হন, তবে বানরের সাহায্য চাইতেন না—একাই রাবণকে হারাতে পারতেন।”মুকেশ খান্নার বক্তব্য, রাম ধৈর্যশীল, তপস্বী চরিত্রের—যিনি ১৪ বছরের বনবাস মেনে নিয়েছিলেন হাত জোড় করে, শবরীর অবহেলা সহ্য করেছিলেন, আর তীর–ধনুক ছিল তাঁর কর্তব্যের হাতিয়ার, প্রদর্শনের নয়।

তবে কি রণবীরের ‘অ্যানিম্যাল’-এর ইমেজ রামের পথে বাধা? শক্তিমান-এর বক্তব্যে পাওয়া যাচ্ছে এমনই ইঙ্গিত। রণবীরকে ‘ভাল অভিনেতা’ বললেও, মুকেশ খান্নার মতে ‘অ্যানিম্যাল’-এর বিতর্কিত ইমেজ রামের গ্রহণযোগ্যতায় বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলতে পারে। দর্শক যদি রামকে শুধু অ্যাকশন-হিরো রূপে দেখে, তবে চরিত্রের আধ্যাত্মিক মহিমা হারিয়ে যাবে বলেই তাঁর আশঙ্কা।
তিনি জানান, ‘রামায়ণ: দ্য ইন্ট্রোডাকশন’ টিজার দেখে তিনি প্রথমে একটি ভিডিও বানান, যেখানে তাঁর আপত্তির কথা বলা হয়। কিন্তু পরে টিম জানায়, সেসব ক্লিপ নাকি ইউটিউবারদের বানানো কৃত্তিম মেধা অর্থাৎ এআই দিয়ে তৈরি করা ফেক ভিডিও—তাই তিনি প্রকাশ করেননি।
যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করে—রণবীর একসময় গরুর মাংস খাওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন—তখন খন্নার জবাব, “আমি বলেছি, এই নিয়ে কিছু বলব না। হয়তো খেয়েছে, হয়তো বন্ধ করে দিয়েছে খাওয়া। যাকগে।”তবে মুকেশ খান্না মনে করিয়ে দিলেন—“রামায়ণ বিশ্বের সেরা কাহিনি। কিন্তু শুধু ১০০০ কোটি টাকা ঢাললেই সাফল্য আসবে না। শক্তিমানও সুপারহিট হয়েছিল গল্পের জন্য, তারকাখচিত ঝলকের জন্য নয়।”
তাহলে ছবিতে স্টার-পাওয়ার কেন দরকার? তাঁর সাফ জবাব—“যদি শক্তিমানে বড় তারকা নিলে চলবে ধরে নেন, মানে আপনি গল্পে ভরসা করছেন না। রামায়ণেও তাই—ইতিমধ্যেই সানি দেওল, সাই পল্লবী, যশের মতো শক্ত অভিনেতা আছেন, তাহলে অত বড় স্টার কেন?”
সংক্ষেপে, মুকেশ খন্নার রামায়ণ বার্তা স্পষ্ট—রামের চরিত্রকে অ্যাকশন হিরো বানালে কাহিনির আত্মা হারিয়ে যাবে। কোটির বাজেট নয়, প্রয়োজন ভক্তি, সততা আর চরিত্রের মহিমা।
