নেশার ঘোরে ট্রাক্টর চালানোর বায়না করে সূর্য। সোহাগের বারণ না শুনেই ট্রাক্টরে চেপে বসতে যায় সে। ব্যস, বেসামাল হয়ে নায়ক-নায়িকা দু'জনেই পড়ে যান! কী হল তারপর? হদিস পেতে আজকাল ডট ইন পৌঁছে গিয়েছিল বানতলার ক্যাপ্টেন হাউজে‌। সান বাংলার ধারাবাহিক ধারাবাহিক 'সোহাগে আদরে'র শুটিং ফ্লোরে। 


আটক নায়ক


ফ্লোরে তো নয়! এক কথায় বলতে গেলে একটা বাগান বাড়ি। শীতের দুপুরের মিঠে রোদ এসে পড়েছে বাড়ির লাগোয়া বাগানে। চলছে শুটিংয়ের তোরজোড়। নায়ক-নায়িকা দু'জনেই তখন মেকআপে ব্যস্ত। নায়িকার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার জন্য সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই নিচের ঘরে জোরে জোরে দরজা ধাক্কা দেওয়ার শব্দ। কে করছে এমন? ঘরের বাইরে দু'জন টেকনিশিয়ানও জড়ো হয়েছেন। কী হয়েছে? জানা গেল, নায়ক ঘরের ভিতরে আটকে পড়েছেন। বেকায়দায় ছিটকিনি দিতে গিয়ে বাইরে থেকে লক হয়ে গিয়েছে দরজা। কিছুক্ষণ ধাক্কাধাক্কির পর অবশেষে খোলা গেল দরজা, হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন নায়ক। এদিকে তখন নায়িকার হেয়ার হচ্ছে। আজকাল ডট ইন-এর ক্যামেরা দেখেই এক গাল হেসে পর্দার 'সোহাগ' ওরফে অভিনেত্রী অরুণিমা হালদার বললেন, "এত দূরে শুটিং ফ্লোর খুব বোর লাগে, তোমরা এলে একটু গল্প করতে পারব।" 


নায়ক-নায়িকার আলাপ

 


বেশিক্ষণ আড্ডা আর দেওয়া গেল না, ডাক পড়ল শুটিং ফ্লোর থেকে। অরুণিমার সঙ্গে ফ্লোরে যেতে যেতে কানে এল নায়কের গলায় বাংলা গান। একটা আধুনিক বাংলা গান গুনগুন করছেন পর্দার 'সূর্য' ওরফে অভিনেতা শুভরঞ্জন মুখোপাধ্যায়। হুট করে নায়িকা দেখে লজ্জা পেলেন বুঝি! গান থামিয়ে দিলেন। বাগান পেরিয়ে ফ্লোরে যাওয়ার সময় অরুণিমা বলেন, "সোহাগ ও সূর্য যতই নদীর এপার আর ওপার হোক না কেন, একটু একটু করে কাছে আসছে ওরা। অজান্তেই কখন প্রেমে পড়বে কেউ জানে না।" অরুণিমার কথার রেশ টেনে শুভরঞ্জন বলেন, "একদম ঠিক। ওদের জীবনের চয়েজ হয়তো আলাদা, তবে কোথাও একটা মনের মিল আছেই। এই মিলই একদিন কাছাকাছি আনবে ওদের। আমার এই চরিত্রে এত হিরোইজম রয়েছে, টিভিতে যখন নিজেকে দেখি, নিজেরই ভাল লাগে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমার বাবাও সেদিন প্রশংসা করেছিলেন। এটাই সেরা পাওয়া।"

 

পড়ে গেলেন নায়ক-নায়িকা


ফ্লোর, মানে ট্রাক্টর রেডি। এবার নায়ক-নায়িকার সংলাপের পর পড়ে যাওয়ায় সিনের শুট। সেই মতো একটা গদি পেতে দেওয়া হয়েছে, যাতে পড়ে গিয়ে তেমন চোট না লাগে নায়ক-নায়িকার। প্রথম টেকে ঠিক পড়ে যাওয়ার আগের মুহূর্তে নায়কের হাত ছেড়ে দেন নায়িকা! ফলে আচমকাই পড়ে যান নায়ক। হাসির রোল ওঠে ফ্লোর জুড়ে। শুভরঞ্জনও চমকে ওঠেন, তেমন যুতসই প্রতিক্রিয়া দিয়ে উঠতে পারেন না। এদিকে, অরুণিমা তো হেসে লুটোপুটি। পরের টেকে যদিও একসঙ্গে গদির উপর পড়েন দু'জন। এরপর ট্রাক্টর চালিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিন। অরুণিমার তত্বাবধানে ট্রাক্টর চালান শুভরঞ্জন। কয়েকটা টেকের পর ফিরে আসেন বাগান বাড়িতে। তখন সবে সন্ধে নেমেছে। বারান্দায় খোশমেজাজে গল্প জুড়লেন নায়ক-নায়িকা‌। অরুণিমার কথায়, "ছোটবেলায় কার্টুনে যেমন দেখতাম, একটা সমস্যায় পড়লে দিনের দিনই তার সমাধান হয়ে যাচ্ছে। এই গল্পেও তাই হয়। সমস্যা আসতেই থাকে, তবে খুব তাড়াতাড়িই সমাধান হয়ে যায়। তাই দর্শকের ইন্টারেস্ট ধরে রাখা সহজ হয়।" শুভরঞ্জন বলেন, "প্রতিদিন নিত্য নতুন মোড়ে দারুণভাবে সাজছে এই গল্পটা। আমাদের অভিনয় করতেও বড্ড ভাল লাগছে। তাই আশা করব, দর্শকের কাছেও খুব তাড়াতাড়ি প্রিয় হয়ে উঠব।"


গল্পের মাঝে সন্ধের টিফিন মুড়ি মাখা চলে এল, সঙ্গে চা। ব্যস! আরও জমল শীতের আমেজ।