বলিউড অভিনেত্রী এবং প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স সঙ্গীতা বিজলানি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার পরও এখনও মানসিক আঘাত এবং উদ্বেগ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেননি। ‘ত্রিদেব’ খ্যাত এই অভিনেত্রী শনিবার পুনেতে একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন, যেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি ডাকাতির ঘটনায় নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পুলিশের কাছে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করার অনুরোধ জানান।

সঙ্গীতা বলেন, “আমি পুনেতে এসেছি বিশেষভাবে এসপি সন্দীপ সিং গিলের সঙ্গে দেখা করতে। আমি তাঁকে অনুরোধ করেছি যেন তিনি বিষয়টি দ্রুত দেখেন, কারণ আমার বাড়িতে চুরি হয়েছে। আমি একজন নারী হিসাবে আমার নিজের বাড়িতেই এখন খুব আতঙ্কিত বোধ করছি। এই বাড়িতেই আমি গত ২০ বছর ধরে থাকছি।”

প্রসঙ্গত, পুনের পাওনধারান এলাকায় অবস্থিত সঙ্গীতা বিজলানির বাংলোতে কয়েক মাস আগে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। চোরেরা বাংলোর পিছনের দিক দিয়ে প্রবেশ করে প্রথম তলায় থাকা একটি টেলিভিশন যার মূল্য প্রায় সাত হাজার টাকা এবং ৫০ হাজার নগদ অর্থ নিয়ে যায়। মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫৭ হাজার টাকা।

বাংলোটি পুনে জেলার টিকোনা পেঠ এলাকায় অবস্থিত এবং চার মাস ধরে খালি ছিল। ঘটনাটি ধরা পড়ে ১৮ জুলাই সকালে, যখন সঙ্গীতা সকাল ৯.৩০টার দিকে সেখানে পৌঁছন। এরপরই জানা যায়, ডাকাতেরা পিছনের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র চুরি করেছে। লোনাভলা রুরাল থানায় এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশের মতে, অভিযোগটি করেছেন সঙ্গীতার এক কর্মচারী। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের খোঁজ মেলেনি।

৬৫ বছর বয়সি সঙ্গীতার বিনোদনজগতে যাত্রা শুরু হয় মাত্র ১৬ বছর বয়সে মডেলিংয়ের মাধ্যমে। ১৯৮০ সালে তিনি মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্সের খেতাব জেতেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে অনুষ্ঠিত মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেখানে তিনি ‘সেরা ন্যাশনাল কস্টিউম’ পুরস্কার পান। সেই পোশাকটি ডিজাইন করেছিলেন তাঁর মা, পুনম বিজলানি।

এরপর ১৯৮৮ সালে আদিত্য পাঞ্চোলির বিপরীতে ‘কাতিল’  সিনেমার মাধ্যমে তিনি বলিউডে অভিষেক করেন। পরবর্তীতে তিনি ‘ত্রিদেব’, ‘হাতিয়ার’, ‘জুর্ম’, ‘যোদ্ধা’, ‘যুগন্ধর’, ‘ইজ্জত ‘ এবং ‘লক্ষ্মণ রেখা’র মতো একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেন।
বর্তমানে চুরির ঘটনায় তিনি আতঙ্কিত হলেও সঙ্গীতা জানিয়েছেন যে তিনি দ্রুত বিচার এবং নিরাপত্তার আশায় পুলিশের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন।

বলিউডের অন্যতম আলোচিত প্রেমের কাহিনিগুলির মধ্যে একটি ছিল সলমন খান এবং সঙ্গীতা বিজলানির সম্পর্ক। আটের দশকের শেষদিকে দু’জনের দেখা হয় মডেলিং দুনিয়ায়, এবং সেখান থেকেই শুরু হয় ঘনিষ্ঠতা। দু’জনের প্রেম ছিল গভীর, এমনকি তাঁদের বিয়ের কার্ড পর্যন্ত ছাপা হয়ে গিয়েছিল বলে জানা যায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অজানা কারণে বিয়ে ভেঙে যায় এবং তাঁরা আলাদা হয়ে যান। তবুও বিচ্ছেদের পরেও দু’জনের মধ্যে সম্মান ও বন্ধুত্ব বজায় রয়েছে। আজও সলমনের জীবনে সঙ্গীতা এমন একজন ব্যক্তি, যাঁকে তিনি ‘বিশেষ বন্ধু’ হিসাবে পরিচয় দেন।