বলিউডের 'ভাইজান' সলমন খান সম্প্রতি এক টক শো-তে তাঁর স্কুল জীবনের এক অবাক করা ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, ছোটবেলায় তিনি স্কুল থেকে বাদ পড়েছিলেন। সলমন তখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তেন। একদিন তিনি খেলার সময় তাঁর এক বন্ধুকে তিনি ধাক্কা দেন এবং ওই ছেলেটির একটি দাঁত ভেঙে যায়। যদিও ঘটনা ছোট ছিল, কিন্তু স্কুলের শিক্ষিকা তা বড় সমস্যা হিসেবে দেখেছিলেন। 

 


সলমনের কথায়, তখন তাঁর বাবা সেলিম খান স্কুল ফি সময়মতো দিতে পারছিলেন না। তাই শিক্ষিকা তাঁকে স্কুল থেকে বের করে দেন এবং সেলিম খানের কাছে বলেন, “মিস্টার খান, এটা আপনার দোষ।” সলমান তখন ছোট ছিলেন এবং এই অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য বেশ কঠিন ছিল।

 


ওই শো-এ সলমন আরও জানিয়েছেন, তাঁর বাবা পরে শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফি পরিশোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে এবং তাঁকে চূড়ান্তভাবে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। সলমন স্মরণ করেছেন, তখন তিনি খুব কষ্ট পেয়েছিলেন, কারণ তখন তিনি তাঁর বাবাকেই দোষী মনে করেছিলেন। সলমনের জীবনের এই ছোট গল্পটি আজ তাঁর জন্য একটি স্মৃতি, যা তাঁকে হাস্যরসের সঙ্গে মনে করিয়ে দেয় যে কঠিন সময়ে পরিবারের পরিস্থিতি কী হতে পারে।

 

আরও পড়ুন: 'এক কোটি টাকা না দিলে মরতে হবে,' ফের টার্গেট কপিল শর্মা! কলকাতা থেকে গ্রেফতার অভিযুক্ত

 

এর পাশাপাশি, সলমনের স্কুলের অভিজ্ঞতা অনেকের চোখে ছোটবেলার একটি শিক্ষণীয় ঘটনা হিসেবেও ধরা যেতে পারে। ছোটদের জীবনেও অর্থনৈতিক সমস্যা তাঁদের পড়াশোনা এবং সামাজিক জীবনে প্রভাব ফেলে। সলমনের গল্প এটিই প্রমাণ করে যে, কোন শিশুর দোষ নয়, যদি তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা কোনও সময় সীমাবদ্ধ হয়।

 


শো-এ সলমন বলেন, এই অভিজ্ঞতা তাঁকে শিখিয়েছে ধৈর্য ধরতে এবং নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য সংগ্রাম করতে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে তাঁর বাবার কঠোর পরিশ্রম এবং পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা তাঁকে ভবিষ্যতে একজন সফল ব্যক্তিত্ব হতে সাহায্য করেছে। সলমন আজকের দিনে এই ঘটনাকে এক ধরনের হাস্যকর স্মৃতি হিসেবে মনে করেন।

 

 

এছাড়াও, শো-তে আমির খানও এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তাঁর পরিবারও প্রায় সময়মতো স্কুল ফি দিতে পারত না। এই অভিজ্ঞতাগুলো দেখায় যে, অনেক তারকা শিল্পীও ছোটবেলায় অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে এবং তবু নিজের প্রতিভা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হয়েছে।

 

 

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে বলিউড সুপারস্টার সলমন খান সম্প্রতি আমির খানের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন টুইঙ্কল খান্না এবং কাজলের নতুন চ্যাট শো ‘টু মাচ’-এর প্রথম পর্বে। সেখানেই তিনি জানালেন, ‘পার্টনার’ ছবির শুটিং চলাকালীন প্রথমবার তিনি ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার ভয়াবহ যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়েছিলেন। 

 

 

টুইঙ্কল ও কাজলের সঙ্গে আলাপচারিতায় সলমন বলেন, “এটার সঙ্গে বাঁচতে শিখতে হয়। অনেকেই বাইপাস সার্জারি, হার্টের অসুখ বা আরও অনেক কিছুর সঙ্গে বেঁচে আছেন। আমার যখন ট্রাইজেমিনাল নিউরোলজিয়া হয়েছিল, তখন ব্যথাটা এতটাই অসহনীয় ছিল যে, সেটা নিজের সবচেয়ে বড় শত্রুর জন্যও কামনা করব না। টানা সাড়ে সাত বছর এই কষ্ট আমাকে ভোগ করতে হয়েছে। প্রতি চার-পাঁচ মিনিট অন্তর হঠাৎ ব্যথা শুরু হতো, কথা বলার সময়ও হত। জলখাবার খেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লেগে যেত, তারপর সরাসরি রাতের খাবারে চলে যেতাম। একটা সাধারণ অমলেট খেতেও আমাকে নিজেকে জোর করতে হত, ব্যথা সহ্য করতে হত, যাতে কোনও ভাবে খাওয়াটা শেষ করা যায়।”