নিজস্ব সংবাদদাতা: গত বছর নভেম্বরে মা নন্দিতা সেনগুপ্ত-কে হারিয়েছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। দীর্ঘ দিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। স্বভাবতই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ঋতুপর্ণা। ধীরে ধীরে সেই শোক পেরিয়ে এলেও পুরোপুরি তা আজও কাটিয়ে উঠতে পারেননি অভিনেত্রী। সেকথা তাঁর সমাজমাধ্যমে চোখ বোলালেও স্পষ্ট। প্রয়াত মা’কে নিয়ে কবিতা লিখেছেন অভিনেত্রী। সেই কবিতার সঙ্গে জুড়েছেন মায়ের সঙ্গে তাঁর কাটানো নানান একান্ত মুহূর্তের ছবি। এইমুহূর্তে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন ঋতুপর্ণা। তাঁর স্বামী ও মেয়ের কাছে। সেখান থেকেই আজকাল ডট ইন-এর সঙ্গে মা দিবস নিয়ে নিজের হৃদয়মথিত ভাবনা উজাড় করে দিলেন তিনি।
“মা মানেই পৃথিবী। মায়ের শূন্যতা পূরণ হয় না। এক জীবনে পূরণ হয় না। মা আর নেই, এটা মনে পড়লে এখনও কেমন লাগে। সেটা ভাবলেই সব গণ্ডগোল হয়ে যায়। নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না কিছুতেই। বলতে বলতে গলা বুজে আসে অভিনেত্রীর।”
অপর প্রান্ত খানিক চুপ। নৈঃশব্দতা কাটিয়ে আবেগতাড়িত গলায় ঋতুপর্ণা ফের বলে ওঠেন, “ আজ মায়ের ফোনে একটা বার্তা পাঠিয়েছি... ‘হ্যাপি মাদার্স ডে’ লিখে। মায়ের থাকাটা এতটাই জরুরি আমাদের জীবনে রোজ দেখতে না পারলেও মা আছে....এই অনুভূতিটা যে কী গুরুত্বপূর্ণ, কী ভীষণ দামি...” বলতে বলতে দীর্ঘশ্বাসেরা বড় হয়। “মায়ের কাছে প্রতিদিন যাওয়ার চেষ্টা করতাম। মায়ের পাশে বসে গল্প করতাম। রোজ না দেখতে পারলেও ফোনে কথা তো হতোই। মায়ের সঙ্গে ভালবাসার কথা ভাগ করা, মনের কথা ভাগ করে নেওয়া- সেসব আর সেভাবে কোনওদিন কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারব না। আসলে মা না থাকার যে শূন্যতাটা সেটা এতটা বিরাট এটা বলে বোঝানো যায় না। আমি পারব না। আমার জীবনে প্রথম মা দিবস যখন মা নেই। মা নেই অথচ মায়ের সবকিছুই আছে। মায়ের ছোঁয়া জিনিসপত্র” - বলতে বলতে ফের যেন আনমনা ঋতুপর্ণা।
ফের ফোনের অন্য প্রান্ত নৈঃশব্দ্য। স্মিত হাসির শব্দে তা ভেঙে ঋতুপর্ণা বললেন, " আজ আমার মেয়ে আমাকে একটা সূর্যমুখী ফুল উপহার দিয়েছে। আমার মায়ের খুব পছন্দের ফুল ছিল। আমার প্রিয় সুগন্ধিও উপহার দিয়েছে। মেয়েকে বললাম, “মাদার্স ডে-র আদরটা দাও। তারপর আমার মেয়ের হয়েও একবারদোর করে দাও। কী সুন্দর, পরম মমতায় ও তাই করল.... আগামীকাল ওর জন্মদিন। শাশুড়ির সঙ্গেও ভিডিও করে কথা বললাম। উনি ডিমনেশিয়ায় ভুগছেন। ভুলে যাওয়ার রোগ তো তাই কতটা বুঝলেন জানি না তবে আমাকে আশীর্বাদ করলেন। মাদার্স ডে-র স্পেশ্যাল ডিনারের ব্যবস্থা করছেন আমার স্বামী। সব মিলিয়ে এই আমার মা দিবস। মা-কে বুকে আগলে রাখব সারাজীবন এভাবেই, জানি মায়ের আশীর্বাদ আমার সঙ্গে রয়েছে... মায়ের স্মৃতি নিয়ে বাকি পথটুকু পাড়ি দেব…”
