হলিউডের অস্কারজয়ী তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর সঙ্গে যে ভারতের এক বিশেষ সংযোগ রয়েছে সেকথা জানেন কি? আজ্ঞে হ্যাঁ। এমন চমকে যাওয়ার মতো তথ্য এই প্রথম প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজিত ভক্তরা। সদ্য টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাইটানিক-এর নায়ক নিজেই জানালেন, তাঁর সৎমা একজন শিখ মহিলা। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে উচ্ছ্বাসের বন্যা।

 

 

 

ডিক্যাপ্রিও বলেন, “আমার সৎমা একজন শিখ। আমার বাবা হিপ্পি কাউন্টার কালচারের মানুষ, লস অ্যাঞ্জেলেসে বড় হয়েছেন। তিনি সাতের দশকে আন্ডারগ্রাউন্ড আর্ট মুভমেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।”

 

লিওনার্দোর সৎমা পেগি ডিক্যাপ্রিও একজন অমৃতধারী শিখ। তিনি পাগড়ি পরেন, বহু সময় ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দেখা যায় তাঁকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই ধর্মীয় পথ অনুসরণ করলেও কয়েক বছর আগে তিনি নিয়মিত পাগড়ি পরা শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি লিওনার্দোর বাবা জর্জ ডিক্যাপ্রিওকে বিয়ে করেন। তাঁদের এক ছেলে রয়েছেন, লিওর সৎভাই অ্যাডাম ফেরার। জর্জের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। লিও-র বয়স যখন মাত্র এক বছর, তখনই তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়।

 

এই ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই আবেগমথিত প্রতিক্রিয়া আসছে ভক্তদের কাছ থেকে। এক নেটিজেন লিখেছেন, “এটা জেনে লিও-কে আরও বেশি ভাল লাগছে। এমন পরিবারেই তো এমন একজন মানুষ বড় হন।” আবার কেউ বলছেন, “বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতাদের একজনের সঙ্গে শিখ ধর্মের এই সংযোগ সত্যিই আনন্দদায়ক।”

 

 

 

এতেই শেষ নয়। সাক্ষাৎকারে লিওনার্ডো আরও একটি মজার অভিজ্ঞতার কথা জানান। একবার তাঁর বাবা ও সৎমা কোয়ান্টিন টরেন্টিনো পরিচালিত ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন হলিউড’ ছবির সেটে ঘুরতে এসেছিলেন। সে ছবিতে প্রধান দুই ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন লিও এবং ব্র্যাড পিট। যায় হোক, লিওর বাবা ও সৎ মাকে এই ছবির সেটে দেখে ব্র্যাড পিট পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারেননি তাঁরা সত্যিই তাঁর বাবা-মা! লিও মজা করে বললেন, “আমি ব্র্যাডকে বলেছিলাম ওরাই আমার বাবা-মা। তিন-তিনবার বলতে হয়েছিল। আর প্রতিবার-ই অবিশ্বাসের হাসি হেসে ব্র্যাড বলছিল, ‘ তাই নাকি? আচ্ছা!’ ও বিশ্বাসই করতে চাইছিল না। আমি বাধ্য হয়েই শেষমেশ বলেছিলাম, আরে, ওদের দেখে ছবির সেটের জুনিয়র এক্সট্রা আর্টিস্ট মনে হচ্ছে তো? ওদের পোশাক পরার স্টাইলটাই এমন!”

 

কাজের দিক থেকেও দারুণ ব্যস্ত লিও। চলতি বছরেই মুক্তি পেয়েছে তাঁর ‘ওয়ান ব্যাটেল আফটার অ্যানাদার’ ছবি, যেখানে তাঁর চরিত্র একজন প্রাক্তন বিপ্লবীর, যার জীবনে ফিরে আসে অতীতের দুঃস্বপ্ন। সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে ছবিটি।

 

 

লিওনার্দোর জীবনের এই মানবিক ও সাংস্কৃতিক দিক যেন আরও একবার মনে করিয়ে দিল তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনেও থাকে বিস্ময়ের বহু রঙ।