সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বরাবরই স্পষ্টভাষী  অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। কখনই নিজের মত নিজস্ব ছন্দে প্রকাশ করতে পিছপা হননি। শোনা যায়, তিনি নাকি কোনও ধরনের অশালীন আচরণ সহ্য করতেন না। পুরনো দিনগুলোতে এমন গল্প শোনা যেত, যে তিনি যদি কোনও পুরুষ সহ-অভিনেতার থেকে অশালীন আচরণ পেতেন, তাহলে তাঁকে ‘উচিত কথা’ বলে কিংবা থাপ্পড় মেরে দিয়ে সেই ব্যবহারের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতেন!  সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, মৌসুমী সেইসব দিন এবং কীভাবে তার মুখ খোলার কারণে তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছিল, সে বিষয়ে কথা বলেছেন।

 

 

সেই সাক্ষাৎকারে, মৌসুমীকে তাঁর কেরিয়ারের পুরনো দিনের কথা যখন জিজ্ঞেস করা হয়, যখন তিনি ‘অভিনেতাদের থাপ্পড় মেরেছিলেন যারা খারাপ আচরণ করেছিল’। উত্তরে মৌসুমী বলেন, “সেসব তাঁদের প্রাপ্য ছিল, তাঁরা ছিলেন লিঙ্গবিদ্বেষী। কিন্তু আমি তাদের পুরোপুরি দায়ী করি না। এটা দুটি দিক থেকে দেখা উচিত। সেই সময়ে বলিউডের নায়কেরা নায়িকাদের সাথে ফ্লার্ট করতেন এবং সঙ্গে এও চাইতেন নায়িকারাও যেন তাঁদের সঙ্গে পাল্টা ফ্লার্ট করেন, তাঁদের মনমতো প্রতিক্রিয়া দেয়। নায়িকাদের সঙ্গে এই আচরণ-ই তাঁরা জানতেন, আর কোনও উপায় তাঁদের জানা ছিল না। আসলে, আসলে... পুরুষদের তাদের মায়েরা, স্ত্রীরা, বোনেরা তাদের অত্যধিক আদরে বড় করে তোলে।”

 

 

এই সাক্ষাৎকারে, মৌসুমী আরও জানান, তিনি কখনওই তাঁর  মর্যাদার সঙ্গে  আপোস করেননি এবং সেই কারণেই তাঁকে অনেক ছবির কাজ হারাতে হয়েছে। গুলজার-এর ‘কোশিশ’-এ জয়া বচ্চনকে নেওয়া হয়েছিল তাঁর বদলে। সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে, মৌসুমী বলেন, “এর কারণ আমি কখনওই নিজের মর্যাদার সাথে আপোস করিনি, কোনও মূল্যেই করিনি। যাই হোক, এটা এখন অতীত। গুলজার এবং আমি বহু বছর পর ‘আঙ্গুর’-এ কাজ করেছি একসঙ্গে । হরি ভাই (সঞ্জীব কুমার) ছিলেন আমার নায়ক ‘কোশিশ’ ছবিতে এবং 'আঙ্গুর'-এও। আমি অনেক চরিত্র হারিয়েছি কারণ আমি কারওর অহংকারকে প্রশ্রয় করিনি।”

 

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে ‘বালিকা বধূ’ ছবির মাধ্যমে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে পা রেখেছিলেন মৌসুমী। পাঁচ বছর পর, তিনি বলিউডে পা রাখেন ‘অনুরাগ’ ছবির মাধ্যমে। সাতের দশকে অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খন্না, রাজেশ খান্নার মতো শীর্ষ তারকাদের সাথে কাজ করেছিলেন মৌসুমী তবে তাঁর সবচেয়ে সফল হিন্দি ছিল বিনোদ মেহরার বিপরীতে। ১৯৮৫ সালের পর তিনি সহায়ক চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছবি  'আড়ি'তে দেখা গিয়েছে তাঁকে।