বলিউডে তারকা-সন্তানদের একের পর এক সুযোগ পাওয়া, কাজ পাওয়া নিয়ে যেমন বিতর্ক উঠেছে তেমনই তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন উঠেছে। মিঠুন চক্রবর্তীর বড় ছেলে মিমোহ চক্রবর্তী সেই আলোচনার কেন্দ্রে বহুবার এসেছেন। ২০০৮ সালে রাজ এন সিপ্পির জিমি ছবির সুবাদে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন মিমোহ। কিন্তু ছবিটির বক্স অফিসে ভরাডুবি হয়। এরপর ২০১১ সালে বিক্রম ভাটের ‘হন্টেড – থ্রিডি’ ছবির সাফল্য তাঁকে সাময়িক স্বস্তি দিলেও, ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে নিয়মিত বড় সুযোগ দিতে পিছপা হয় এবং একটা সময়ের পর কাজের সুযোগ না পাওয়াতে অভিনয় জগৎ থেকে একপ্রকার নিজেকে সরিয়েই নিয়েছিলেন মিমোহ। সম্প্রতি, নেটফ্লিক্সে প্রসেনজিৎ-জিৎ অভিনীত ‘খাকি: দ্য বেঙ্গল চ্যাপ্টার’ ওয়েব সিরিজে বহু বছর পর কামব্যাক করেছেন মিমোহ। সেই সিরিজে তাঁর কাজ প্রশংসিতও হয়েছে সমালোচক মহলে। 

 


এবার মিঠুনের ছোট ছেলে তথা অভিনেতা নমস্বী চক্রবর্তী স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, বলিউডে আদতে কোনও হাসিখুশি এক বিরাট পরিবার নয় মোটেই। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন—“মানুষ ভাবে বলিউড ইন্ডাস্ট্রি মানেই একটা পরিবার। এটা সবচেয়ে বড় মিথ্যে! এখানে কেউ কারও পরিবার নয়। এখানে সবটাই ব্যবসা। তুমি ব্যবসা দেবে, তাহলে তুমি তারকা। না হলে তুমি কেউ নও!”

আরও পড়ুন:  ‘আমরা কখনও গোমাংস খাইনি’ কেন সলমনের বাড়িতে এই মাংস ঢোকে না? বড় মন্তব্য সেলিম খানের!

নমস্বী আরও জানান, মিমোহকে তাঁর মর্যাদার সঙ্গে মানানসই কোনও ছবি-লঞ্চিং দেওয়া হয়নি। জিমি করতে তাঁকে বাধ্য হয়েছিল। কারণ সেই সময়ে মিমোহকে নিয়ে অন্য যেসব ছবির কথাবার্তা চলছিল, তা আটকে পড়েছিল। কেরিয়ার সচল রাখতেই মিমোহ বাধ্য হয় জিমি ছবির মাধ্যমে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন। তবে এই ছবির ব্যর্থতায় মিঠুনের কোনও যোগসূত্র নেই বলে সাফ জানিয়েছেন নমস্বী।

 

যদিও ‘হন্টেড’ ছবিটি বক্স-অফিসে জনপ্রিয় হয়েছিল, তবুও মিমোহর প্রতি ইন্ডাস্ট্রির ভরসা দেখা যায়নি। নমস্বীর অভিযোগ, “কিছু এমন তারকা-সন্তান আছেন, যাঁরা মিমোহর তুলনায় অনেক বেশি ফ্লপ ছবি দিয়েও একের পর এক ছবিতে কাজের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। মিমোহের থেকে খারাপ রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও তাঁদের সামনে প্রযোজকদের দরজা খোলা। ওঁরাও যে প্রতিভাধর তাতে সন্দেহ নেই, কিন্তু...বলিউড মোটেও ঘনিষ্ঠ পরিবার নয়।”

 

নমস্বী তাঁর দাদার কাছ থেকে পাওয়া একমাত্র পরামর্শও জানিয়েছেন—“ দাদা বলেছে, খুব শক্ত আর সাহসী হতে হবে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে শুক্রবার ছবিটা হিট হলে তুমি তারকা। যদি না হয়, তাহলে পরদিন থেকেই তুমি সবার কাছে গুরুত্বহীন।” তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ‘হন্টেড থ্রিডি’–র সিক্যুয়েল ‘ঘোস্টস অফ দ্য পাস্ট’ মুক্তির পর পরিস্থিতি পাল্টাবে।

 

মিমোহ হন্টেড -এর পর ‘লুট’ (২০১১), ‘এনিমি’ (২০১৩)-র মতো কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন, কিন্তু দর্শক বা সমালোচকের মনে দাগ কাটতে পারেননি। 'এনেমি'–তে বাবার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন, ছবির প্রযোজক ছিলেন মা যোগিতা বালি।

তবে নমস্বীর বিস্ফোরক মন্তব্য নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে— বলিউড কি আদতেই তারকা-সন্তানদের জন্য স্বর্গ না কি ব্যবসা আর সম্পর্কের ফাঁকে অনেক প্রতিভাই চিরকালের জন্য হারিয়ে যায়?