নিয়মানুবর্তীতার প্রতি জয়া বচ্চনের ভালবাসা সর্বজনবিদিত। তাঁর স্পষ্ট কথা ও দৃঢ় মতামত বহুবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তবুও নিজের অবস্থানে তিনি অটল থাকেন।

কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে জয়া একেবারেই আলাদা। সেখানে নেই কোনও কঠোর নিয়ম, নেই অনুশাসনের চোখরাঙানি। খামখেয়ালিই যেন তাঁর পরিচয়। মন যা চায়, তিনিই করেন—সেখানে সেটাই শেষ কথা।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জয়া বলেন, “আমি কখনও ভাবি না এটা করব, সেটা করব। সেই সময় যা মনে হয়, তা-ই করি। তার আগে এত কিছু ভাবি না। আমি মনে করি, আমি কখনওই পরিকল্পনা করে কিছু করি না। কারণ সেটা করলেই সবটা ভুল হয়ে যায়। কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়া কিছু করলে, সেটা মন থেকে আসে। মাথা থেকে নয়। আমি হৃদয়জীবী, আমি বুদ্ধিজীবী নই।”

জয়া বচ্চনকে ঘিরে বিতর্ক কখনও থামেনি। অনেকে তাঁর সরাসরি আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেন। তবু তিনি মনের কথা বলতে একটুও পিছপা নন। নিজের সত্যকে প্রকাশ করার এই দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই আবার বহু মানুষ তাঁর প্রশংসাও করেন। নেটমাধ্যমে একজন লিখেছেন, ‘ওঁকে খুব ভাল লাগে। খুব সোজাসাপ্টা কথা বলেন। ঠিক-ভুল যা-ই হোক, সেটা মুখে উপর বলে দেন। রাখঢাক করেন না।’ আবার অন্য একজন বলেন, ‘উনি সত্যিটা বলেন। কোনও কিছু লুকোন না।’

একই সাক্ষাৎকারে জয়া বলেন,  ছেলে অভিষেক বচ্চন ও মেয়ে শ্বেতা বচ্চন-নন্দাকে শৈশবে কড়া শাসনে রাখতেন তিনি। তবে অভিনেত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, পুত্রবধূ ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের ক্ষেত্রে কখনও সেই কঠোরতা প্রয়োগ করেননি। তবে শৃঙ্খলার প্রতি তাঁর দৃঢ় বিশ্বাসের কথা সকলের বরাবরই জানা। নতুন এক সাক্ষাৎকারে জয়া আরও বিস্তারিতভাবে জানালেন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, স্বামী অমিতাভ বচ্চনের মধ্যে এই গুণটিই সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে তাঁকে।

জয়া বলেন, “ওঁর (অমিতাভ বচ্চন) মধ্যে সবচেয়ে ভাল লাগে ওঁর নিয়মানুবর্তিতা।” নিয়মানুবর্তীতা সম্পর্কে নিজের কঠোরতার প্রসঙ্গ তুলে জয়া আরও জানান, “আমি সত্যিই খুব কঠোর মা ছিলাম।”

সন্তানরা ছোটবেলায় তাঁকে ভয় পেত কি না—এই প্রশ্নে জয়ার সহজ উত্তর, “অবশ্যই। যদিও আজকের প্রজন্মে এ কথা বলা হয়তো ঠিক মানাবে না, কিন্তু কখনও কখনও ছোটরা সীমা ছাড়ালে একচোট বকাঝকা বা একটা চড়ও দরকার হয়। এতে তারা বুঝতে পারে—ভুল করেছি, তাই শাস্তি পেয়েছি। তবে অতিরিক্ততার পক্ষপাতী নই।”