বলিউড অভিনেত্রী ইশা কোপিকরকে অনেকেই মনে রেখেছেন ‘ডন’, ‘এলওসি কার্গিল’, ‘সালাম-এ-ইশক’–এর মতো ছবির জন্য। তবে খুব কম মানুষই জানেন তাঁর কেরিয়ারের শুরুর দিককার এক চমকপ্রদ ঘটনার কথা। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইশা জানালেন, তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘চন্দ্রলেখা’র শুটিংয়ে তিনি দক্ষিণী তারকা নাগার্জুনের কাছে অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে সত্যি চড় মারার জন্য! আর ফলস্বরূপ, একই দৃশ্যের শুটে তাঁকে ১৪ বার ঠাটিয়ে চড় খেতে হয়েছিল!
 

অভিনয়ের জন্য সহ্য ১৪ বার চড়! কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অভিনেত্রী? ছবির চিত্রনাট্য অনুযায়ী, সেই দৃশ্যে ইশার চরিত্রটি খুব রেগে যায় এবং তাঁকে একটি সপাট চড় খেতে হয়। বাস্তবিক অনুভব ও একাগ্রতায় বিশ্বাসী ইশা বলেন, “আমার দ্বিতীয় ছবি ছিল সেটা। আমি চাইছিলাম, আসল রাগটা যেন চোখেমুখে ফুটে ওঠে। তাই ওঁকে বলেছিলাম, ‘নাগ, তুমি সত্যিকরে কষিয়ে চড় মারো আমাকে।’  উনি অবশ্য প্রথমে মানতেই চায়নি। তারপর জিজ্ঞেস করেছিল আমাকে বলে, ‘তুমি ঠিক বলছ তো?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, আমি চাই।’ এরপর ও বেশ আস্তে করেই প্রথমবার চড় মারল।”

 

কিন্তু তা সত্ত্বেও ক্যামেরায় আমার কাঙ্খিত অভিব্যক্তি ধরা পড়েনি। “শেষমেশ ১৪ বার আমাকে চড় খেতে হয়েছিল! শেষে আমার মুখে স্পষ্ট দাগ পড়ে গিয়েছিল। তখন নাগ ভীষণ দুঃখ পেয়ে বলছিল, ‘আমি খুব দুঃখিত’। আমি বললাম, ‘তুমি দুঃখ কেন করছ? আমিই তো বলেছি মারতে।’”

 

‘চন্দ্রলেখা’ ছবির মাধ্যমেই দক্ষিণী ছবিতে পা রেখেছিলেন ইশা।   ১৯৯৮ সালের এই ছবিটি ছিল ইশার প্রথম তেলুগু ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয়। ছবিটি মালয়ালম ছবি 'চন্দ্রলেখা'র রিমেক, পরিচালনায় ছিলেন কৃষ্ণা ভামসি। অভিনেত্রী ছাড়াও ছবিতে ছিলেন নাগার্জুন, রাম্যা কৃষ্ণন, চন্দ্র মোহন, গিরি বাবু, প্রমুখ।

 
২০২৪ সালে ইশাকে শেষ দেখা গিয়েছে এয়লাং ছবিতে, যেখানে তাঁর সহ-অভিনেতা ছিলেন শিবকার্তিকেয়ান এবং রকুল প্রীত সিং। ছবিটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ভিত্তিক ছিল এবং বিশ্বব্যাপী ৭৬.৫ কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা করেছে। তবে আপাতত ইশা কোপ্পিকারের পরবর্তী প্রজেক্ট নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।

 

প্রসঙ্গত, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস নাগাদ হোটেল ব্যবসায়ী টিমি নারং-এর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন ইশা কোপিকর। বলি-অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাঁর প্রাক্তন স্বামী-ই বিবাহবিচ্ছেদের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে টিমির সঙ্গে চার হাত এক করেছিলেন ইশা। ২০১৪-এ জন্ম নেন তাঁদের কন্যা রিয়ানা।

 


ইশার আরও দাবি, তৎকালীন স্বামীর মুখে একথা শুনে তিনি কোনও ঝামেলা করেননি। আইনি লড়াইয়ের পথেও হাঁটেননি। কেন? অভিনেত্রীর কথায়, “আমার পক্ষে বিবাহবিচ্ছেদের পক্ষে সায় না দেওয়াটা সহজ ছিল। কিন্তু কী লাভ? একসঙ্গে থেকে সবসময় ঝগড়া-ঝামেলার থেকে এটাই অনেক ভাল।" কেন বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন তাঁর স্বামী? দাম্পত্যে কোথায় সমস্যা দেখা দিয়েছি?

 

ইশার জবাব,  “একেবারে মূল সমস্যাটা কোথায় হচ্ছিল, আমি ঠিক জানি না। তবে মন থেকেই পরস্পরের থেকে অনেকটাই সরে এসেছিলাম আমরা। তারপর বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত ও নিয়েছিল। একদিন এসে তা বলল, আমিও ‘ঠিক আছে’ বলে এককথায় রাজি হয়ে গেলাম। আসলে, সঠিক বোধবুদ্ধি আছে এমন মানুষেরাই এহেন সিদ্ধান্ত এমনভাবে নিতে পারেন বলে আমার বিশ্বাস। চাইলেই এই বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে অনেক ঝামেলা করতে পারতাম। করিনি কারণ সেসব ব্যাপার আমার মূল্যবোধ, শিক্ষার সঙ্গে যায় না। তাছাড়া এক ছাদের তলায় থেকে সর্বক্ষণ পরস্পরের সঙ্গে ঝামেলা করে যাওয়ারও কোনও মানে হতো না। আসলে, কোনও কিছু একবার পচে গেলে তা থেকে দুর্গন্ধ বেরোয়, এমনকি‌ জল থেকেও। অগত্যা...”