বলিউড হোক কিংবা আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রি—আজকের দিনে সিনেমা মুক্তি মানেই ঝড়ের বেগে উঠে আসে সেই ছবি ঘিরে সমালোচনা, প্রতিক্রিয়া  আর রেটিং। সংবাদপত্র-চ্যানেলের সীমা ছাড়িয়ে এখন ছবির সমালোচনা চলে এসেছে সমাজমাধ্যমে - ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে। হাজার হাজার ফলোয়ার আর লাখ লাখ ভিউ নিয়ে রাতারাতি তৈরি হয়েছে নতুন ‘সমালোচক’, ‘রিভিউয়ার তারকা’। কিন্তু এঁদের মধ্যে কত জন সত্যিই নিরপেক্ষ আর কতজন ‘পেইড নেগেটিভ ক্যাম্পেইন’-এর খেলোয়াড় অর্থাৎ টাকা নিয়ে ফরমায়েশ মতো সমালোচনা করা —সেই প্রশ্নটাই এবার বড় হয়ে দাঁড়াল।

এই প্রসঙ্গে কড়া অবস্থান নিল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডিউসার্স কাউন্সিল (IFTPC)। ৩৭৫-রও বেশি প্রযোজক সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী এই সংগঠন সরাসরি অভিযোগ করেছে—কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার না কি টাকা না পেলে ইচ্ছে করে খারাপ সমালোচনা, নেগেটিভ রিয়্যাকশন ভিডিও আর টার্গেটেড ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে, যাতে কোনও নির্দিষ্ট সিনেমার ব্যবসা মার খায়।

 

 

সংগঠনের বক্তব্য, “গঠনমূলক সমালোচনা আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু যারা অর্থ দাবি করে আর টাকা না দিলে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও ছবির বিরুদ্ধে পরিকল্পনা মাফিক ষড়যন্ত্র করে, ক্যাম্পেইন চালায়—তা আর সমালোচনা নয়, একেবারে চাঁদাবাজি।”

আইএফটিপিসি (IFTPC) জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই আইনি পরামর্শ নিচ্ছে এবং প্রয়োজনে সিভিল ও ক্রিমিনাল—দুই ধরনের মামলাই করা হবে। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের ‘অসাধু প্র্যাকটিস’ ইন্ডাস্ট্রির সৃজনশীলতা আর অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর আঘাত করছে।

কেন এত বড় সমস্যা?

গত এক দশকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জোয়ারে রিভিউ আর বিশ্লেষণের বাজার গজিয়ে উঠেছে বিস্ফোরক হারে। ইউটিউবে সিনেমা-রিভিউ চ্যানেল, ইনস্টাগ্রামে শর্ট রিল, ফেসবুকে লাইভ রিয়্যাকশন—সবই আজ কোটি কোটি দর্শক টানছে। এই জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্রভাবও। তাই প্রযোজক সংস্থার আশঙ্কা—যদি এই প্রভাব ‘চাঁদাবাজি’র হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়, তবে সিনেমা মুক্তির আগেই তার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়ে যাবে দর্শকের কাছে।