বলিউড- হলিউডের ইতিহাসে এমন বহু মুহূর্ত আছে, যা পরে এসে “হয়তো হলে কেমন হত” এই আফসোসের হাওয়ায় উড়ে যায়। আর সেই তালিকারই এক বড় নাম ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। খুব কম মানুষই জানেন, ২০০৪ সালের ব্লকবাস্টার ঐতিহাসিক মহাকাব্য ‘ট্রয়’–এ ব্রিসেইসের মুখ হিসেবে প্রথমে ভাবা হয়েছিল ঐশ্বর্যকে। ব্র্যাড পিট অভিনীত এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে দাঁড়ানোর কথা ছিল এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রীর। প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল অভিনেত্রীকে। কিন্তু শেষমেশ ব্যাপারটা আর হল না।
জানা গিয়েছিল, ব্রিসেইসের চরিত্রটিতে অভিনয় করলে ছবিতে বেশ কিছু সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করত ঐশ্বর্যকে। সেইসব দৃশ্য নিয়ে অস্বস্তি থাকায় বিনয়ের সঙ্গে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন ঐশ্বর্য। পরে সেই চরিত্রটি যায় রোজ বাইর্নের হাতে, আর ‘ট্রয়’ বিশ্বজুড়ে ঝড় তোলে। আয় করে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার, সঙ্গে অস্কার মনোনয়নও।
বছর কয়েক পর, ২০১২-য় নিজের ছবি কিলিং দেম সফ্টলি–র প্রচারে এসে ব্র্যাড পিট বলেন, “ঐশ্বর্যের সঙ্গে কাজ করার সুযোগটা হাতছাড়া হওয়াটা আজও খারাপ লাগে। ও অত্যন্ত বহুমুখী অভিনেত্রী। সে শুধু ভারতের নয়, পশ্চিমেও দারুণ সম্মান কুড়িয়েছে তার সৌন্দর্য, স্টাইল আর অভিনয়ের জন্য।” ব্র্যাডের কথাতেই স্পষ্ট ছিল, বিশ্বখ্যাত এই হলিউড তারকা নিজেও বুঝেছিলেন দু’জনের একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা কতটা অনন্য হত।
কিন্তু ‘ট্রয়’ ছিল না একমাত্র বড় প্রজেক্ট, যেখানে ঐশ্বর্যকে ভেবেছিলেন বিদেশি নির্মাতারা। উইল স্মিথের সঙ্গে ‘হিচ’, ‘সেভেন পাউন্ডস’, এমনকী ‘টুনাইট হি কামস’-এই তিনটি বড় ছবির জন্যও তাঁর নাম চূড়ান্ত পর্যায়ে উঠেছিল। তবে প্রত্যেকবারই অভিনেত্রী বেছে নিয়েছেন, পরিবারকে।
২০০৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বর্য পরিষ্কার বলেন, “স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ের সময় ছিল ঠিক দীপাবলির পরে। সেই সময়ই দিদার শরীর খুব খারাপ হয়েছিল। লস এঞ্জেলসতে যাওয়ার সময়ই ছিল না। আমার কাছে পরিবারই সবার আগে।” ‘টুনাইট হি কামস ’ ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও তিনি অকপটে স্বীকার করেন “খারাপ লাগতেও পারে, কিন্তু আমার অগ্রাধিকার খুব পরিষ্কার—পরিবার আগে।”
উইল স্মিথও পরে আফসোস করে বলেন, “ঐশ্বর্য শুধু দাঁড়িয়ে থাকলেও একটা শক্তি তৈরি হয়। ওর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হারানো সত্যিই দুঃখের।”
অর্থাৎ একদিকে হলিউডের টানা অফার, অন্যদিকে ঘরের টান। আর তার মাঝেই ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের সিদ্ধান্ত—নিজের শর্তে বাঁচা, নিজের নিয়মে পথ চলা। আর এই জায়গাতেই তিনি আজও আলাদা!
