বেশ কয়েক বছর আগে মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। এবার তাঁর এক নতুন রোগের কথা প্রকাশ করলেন ‘দঙ্গল’-এর অভিনেত্রী। যা শুনে বিস্মিত অনুরাগীরা।

ফাতিমা জানিয়েছেন, জীবনের এক পর্যায়ে তিনি বুলিমিয়া রোগে ভুক্তভোগী হন। খাওয়ার নিয়ন্ত্রণ হারানোর মানসিক রোগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। বাইরের দুনিয়া তাঁকে হাসিখুশি ও আত্মবিশ্বাসী হিসেবে দেখলেও, ভেতরে ভেতরে তিনি লড়াই করছিলেন ভয়ঙ্কর অভ্যাস ও মানসিক চাপের সঙ্গে।


‘দঙ্গল’-এর সময়ে শরীরের গঠন বদলানোর জন্য ফাতিমার উচ্চ ক্যালোরির ডায়েট ছিল বাধ্যতামূলক। সেই ছবির শুটিং শেষে খাবারের উপর নির্ভরতা আর কমাতে পারেননি অভিনেত্রী। খাবার যেন তাঁর কাছে এক ধরনের আশ্রয় হয়ে ওঠে। আবার একই সঙ্গে অপরাধবোধের কারণ। কখনও অতিরিক্ত খাওয়া, কখনও তা লুকোনোর চেষ্টা-এই চক্রে তিনি নিজেই নিজেকে আটকে ফেলেছিলেন।

ফাতিমা জানিয়েছেন, বন্ধুমহলে একজনই প্রথম তাঁর সমস্যা বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা সহ-অভিনেত্রী সান্যা মালহোত্রা। ফাতিমার আচরণ অস্বাভাবিক এবং এর পেছনে বড় মানসিক চাপ কাজ করছে বলে মনে করেন সান্যা। বন্ধুর এই মন্তব্যই চোখ খুলে দেয়।তিনি আসলে নিজের সঙ্গেই লড়াই করছেন, উপলব্ধি করেন ‘মেট্রো ইন দিনো’র অভিনেত্রীর। 

এই রোগ তাঁর মানসিক অবস্থাকেও বিপর্যস্ত করে। ফাতিমার কথায়, “আমি নিজেকে দোষ দিতাম, মনে হতো আমার শরীর, আমার মন-কিছুই আমার নিয়ন্ত্রণে নেই।” এর সঙ্গে যোগ হয় লুকানো ভয় ও লজ্জা। খাবারের সঙ্গে অভিনেত্রীর সম্পর্ক একসময় ‘টক্সিক’ হয়ে পড়ে।


দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ধীরে ধীরে ফাতিমা এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসেন। চিকিৎসা, সচেতনতা ও বন্ধুদের সহযোগিতায় তিনি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, “সাহায্য চাইতে লজ্জা নেই। আমি আমার অভিজ্ঞতা বলছি যাতে অন্যরা ভয় না পায়।”


মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বলিউডের পরিচিত মুখ যখন এ ধরনের বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যেও সচেতনতা বাড়ে। অনেকেই খাবার-সংক্রান্ত মানসিক রোগকে গুরুত্ব না দিয়ে লুকিয়ে রাখেন, যা ভবিষ্যতে আরও বিপদ ডেকে আনতে পারে। এপ্রসঙ্গেই, ফাতিমার বার্তা স্পষ্ট, “মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা লজ্জার নয়। কথা বলুন, সাহায্য নিন, নিজেকে ভালবাসুন।”