বলিউডের বহু প্রতিভার অধিকারী ফারহান আখতার। পরিচালক, অভিনেতা, গায়ক, প্রযোজক— সব ভূমিকাতেই তিনি দর্শকদের চমক দিয়েছেন। তবে বরাবরই তাঁর অভিনয় নিয়ে কিছু সমালোচনা থেকেছে। সেই তালিকায় একেবারে উপরের দিকে নাম রয়েছে কিংবদন্তি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ-এরও। প্রায় এক দশক আগে নাসিরুদ্দিন প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন যে, ফারহানের অভিনয় কিংবা সিনেমা তাঁর বিশেষ পছন্দ নয়।

 

এবার সেই মন্তব্য নিয়েই প্রতিক্রিয়া জানালেন ফারহান। সম্প্রতি, দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে ফারহান জানান, নাসিরুদ্দিন শাহের মন্তব্য শোনার পর তিনি কোনওদিনই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কেন? অভিনেতার স্পষ্ট জবাব— “আমি ২৫ বছর ধরে সিনেমায় কাজ করছি। যদি কারও কাজ নিয়ে আমার কোনও মতামত থাকে, আমি ফোন করি বা সামনে বসে বলি। কিন্তু সেটা করতে হয় ভালবাসা আর শ্রদ্ধার জায়গা থেকে। কারণ, আপনি যখন কারও সৃজনশীল প্রক্রিয়ায় ঢুকছেন, তখন সেটা করতে হয় সংবেদনশীলভাবে, গঠনমূলক ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য। আর সেটা কেবল তখনই সম্ভব, যখন আপনি সেই মানুষটির প্রতি আন্তরিক যত্ন ও ভালবাসা দেখান।আমার মনে হয়েছে, ওঁর মন্তব্যে সেটা ছিল না। ওটা যেন স্রেফ প্রকাশ্যে ছুঁড়ে দেওয়া এক বক্তব্য। তখন আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়— তিনি আমাকে সম্মান দেন না। আর যিনি সম্মান দেন না, তাঁকে ফোন করব কেন?”

 

ফারহানের আরও দাবি, যদি নাসিরুদ্দিন সত্যিই আন্তরিকভাবে কিছু বলতে চাইতেন, তবে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলা খুব সহজ ছিল। কারণ, তিনি শুধু ফারহানকেই নয়, জাভেদ আখতার, শাবানা আজমি, ফারহানের মা— সবাইকে ভালভাবে চেনেন। “ ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’-তেও আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। তাহলে তো ওঁর জন্য সবচেয়ে সহজ ছিল আমাকে ডেকে বলা— ‘আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই, এসো দেখা করি।’”

 

ঠিক কী বলেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ?  ২০১৩ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন বলেছিলেন, “ফারহানের প্রথম ছবি ‘দিল চাহতা হ্যায়’ আমার ভাল লেগেছিল। কিন্তু এরপর ওর সিনেমাগুলো আমার পছন্দ হয়নি। ওর অভিনয়েরও আমি ভক্ত নই। তবে ফারহান অসাধারণ মানুষ। ও গান গায়, অভিনয় করে, লেখে, প্রযোজনা করে— সব পারে। আগামীকাল শুনলেও অবাক হব না যে ও দারুণ রান্না করতে পারে।” অর্থাৎ, বহুমুখী প্রতিভা স্বীকার করলেও, অভিনয়ের জায়গায় কোনওদিনই নাসিরুদ্দিন আশ্বস্ত হননি।

 

ফারহানের বলিউড যাত্রা শুরু সহকারী পরিচালক হিসেবে। কাজ করেছেন লমহে (১৯৯১) ও হিমালয় পুত্র (১৯৯৭)-এ। পরিচালক হিসেবে বাজিমাত করেন দিল চাহতা হ্যায়, লক্ষ্য ও ডন-এ। অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছেন রক অন!!, লাক বাই চান্স, ভাগ মিলখা ভাগ, দিল ধড়কনে দো ছবিগুলোয়।

এখন অপেক্ষা— তাঁর আগামী ছবি ‘১২০ বাহাদুর’-এর জন্য।