রিয়্যালিটি শো 'বিগ বস ১৯' বরাবরের মতোই এবারও বিতর্কে ঘেরা। সাম্প্রতিক এক এপিসোডে প্রতিযোগী নেহাল চুদাসামা চাঞ্চল্যকর দাবি করেন যে একটি টাস্ক চলাকালীন সময়ে গায়ক-সঙ্গীত পরিচালক আমাল মালিক তাঁকে নাকি 'অপ্রাসঙ্গিকভাবে স্পর্শ' করেছেন। তাঁর এই মন্তব্যের পরই বাড়ির ভিতরে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং বাইরে দর্শক মহলেও তা নিয়ে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে।

 

 

 

 

 

তবে এই ঘটনাটা কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি। সপ্তাহান্তের বিশেষ পর্বে সঞ্চালকের আসনে আসেন জনপ্রিয় পরিচালক ফারাহ খান। নেহালের এই অভিযোগ নিয়ে সরাসরি তাঁর দিকে আঙুল তুলে ফারাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “তুমি এমন একটা কাজ করেছো, যাতে নারীবাদকে তুমি একশো বছর পিছিয়ে দিয়েছো।” ফারাহর বক্তব্য ছিল, নেহালের যেখানে সত্যি কথা বলা উচিত ছিল, সেখানে নীরব থেকেছেন, আর যেখানে বলা উচিত ছিল না, সেখানে কথা বলেছেন। তাঁর মতে, এরকম ধরনের 'হালকা' অভিযোগ আনা মানে প্রকৃত নারীর লড়াই ও নারীবাদের মূল শক্তিকে দুর্বল করা।

 

 

 

 

ফারাহ খানের এই তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর নেহালের টিম একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, টাস্ক চলাকালীন সামান্য শারীরিক সংস্পর্শ ঘটেছিল, যা নেহালের অতীতের ট্রমাকে অনিচ্ছাকৃতভাবে জাগিয়ে দেয়। আসলে তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্তিগতভাবে আমাল মালিকের বিরুদ্ধে নয়, বরং নিজের পুরোনো ক্ষতের কারণে। তারা আরও জানায়, আমাল মালিক সঙ্গে সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, আর নেহাল স্পষ্ট করেছিলেন যে এই প্রতিক্রিয়াটি আমালের প্রতি কোনও সরাসরি অভিযোগ নয়।

 

 

আরও পড়ুন: ধারালো অস্ত্র দিয়ে 'খুন'-এর হুমকি! গ্রেফতার শাহরুখ? রাত বাড়তেই কোন বিপাকে জড়ান 'কিং খান'?

 

 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “এটা ছিল একটি মানবিক মুহূর্ত। এক মুহূর্তের আবেগে নেহাল ভেঙে পড়েছিলেন। এটি প্রমাণ করে যে অতীতের যন্ত্রণা এখনও তার মধ্যে রয়ে গিয়েছে, যদিও তিনি তা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছেন।” আরও বলা হয়, “মানুষ খুব সহজে একটি মুহূর্তের ভিত্তিতে কাউকে বিচার করে ফেলে। কিন্তু সেই মুহূর্তের পিছনে কী যন্ত্রণা, কী লড়াই লুকিয়ে আছে, তা তারা বোঝে না।”

 

 

 

 

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দর্শক দু’ভাগে বিভক্ত। একদল মনে করছেন, নেহাল অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন এবং ফারাহ খানের বক্তব্য যথার্থ। অন্যদিকে, অনেকে নেহালের মানসিক অবস্থার প্রতি সহমর্মিতা দেখাচ্ছেন। তাঁদের মতে, ট্রমা একবার কারও জীবনে ঢুকে গেলে পরবর্তীতে ছোট ছোট ঘটনারও বড় প্রভাব পড়তে পারে।

 

 

 

 

 

আমাল মালিক নিজে বিষয়টিকে বাড়তে দেননি। তিনি নেহালের প্রতিক্রিয়াকে সম্মান জানিয়ে নীরব থেকেছেন। তবে ফারাহ খানের মন্তব্যে বিষয়টি নতুন মোড় নিয়েছে। সব মিলিয়ে 'বিগ বস ১৯'-এর এই বিতর্ক আবারও প্রমাণ করল যে রিয়্যালিটি শো কেবল বিনোদন নয়, অনেক সময় মানুষের ভিতরের গভীর ক্ষতকেও প্রকাশ্যে টেনে আনে। নেহালের অভিযোগ সত্য বা মিথ্যা যাই হোক, এটি নারীবাদ, ব্যক্তিগত ট্রমা ও সামাজিক দায়িত্ব নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।