বলিউডের 'কিং খান' অর্থাৎ শাহরুখ খানকে দর্শক একজন সুপারস্টার হিসেবেই চেনেন। কিন্তু তাঁর জীবনের শুরুর দিকে এমন এক ঘটনা ঘটেছিল, যা শুনলে অনেকেই অবাক হন। একবার এক সাংবাদিককে ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগে শাহরুখ খানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আর সেই সময় তাঁকে জামিনে ছাড়িয়ে আনেন অভিনেতা নানা পাটেকর।
ঘটনাটি ঘটে নব্বইয়ের দশকে। তখন শাহরুখ খান বলিউডে নতুন, কিন্তু দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন। একদিন একটি ম্যাগাজিনে তাঁর সম্পর্কে ভুয়ো খবর ছাপা হয়। সেখানে লেখা হয়েছিল, শাহরুখ নাকি এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর সঙ্গে প্রেম করছেন। এই খবর পুরোপুরি ভুয়ো ছিল, আর শাহরুখের স্ত্রী গৌরীর জন্যও এটি বেশ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।

রাগে ফেটে পড়ে শাহরুখ প্রথমে ওই সাংবাদিককে ফোন করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, “তুমি কেন এটা লিখেছ?” সাংবাদিক হেসে উত্তর দেন, “তুমি তো এটা পড়ে নিশ্চই হেসেছ?” তখন যদিও শাহরুখ ঠান্ডা মাথায় বলেছিলেন, “এটা হাসির বিষয় নয়।” এরপরও রাগ না মেটায় তিনি সোজা ম্যাগাজিনের অফিসে পৌঁছে যান।
সেখানে গিয়ে শাহরুখ সাংবাদিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি এক সাংবাদিককে টেবিলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং হুমকি দিতে থাকেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি ধারালো এক ছুরি বের করে সাংবাদিককে ভয় দেখান। শাহরুখ বলে ওঠেন, “আমি আজ তোমায় মেরেই ফেলব।” পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে অফিসে উপস্থিত সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
অবশ্যই এমন আচরণের পর পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। শাহরুখকে গ্রেফতার করা হয় এবং থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যেহেতু সময়টা ছিল সন্ধ্যার পর, তাই সহজে তাঁকে জামিন দেওয়া সম্ভব হয়নি। পুলিশ চাইছিলেন তাঁকে রাতটা জেলে রাখা হোক। শাহরুখও ভেবেছিলেন, হয়তো এ যাত্রা সহজে ছাড়া পাওয়া যাবে না।
ঠিক তখনই সামনে আসেন অভিনেতা নানা পাটেকর। তিনি শাহরুখের হয়ে জামিনের ব্যবস্থা করেন এবং তাঁকে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত করেন। পরে শাহরুখ নিজেও একাধিকবার স্বীকার করেছেন, নানা পাটেকরের এই সাহায্য তিনি কোনওদিন ভুলতে পারবেন না।
এই ঘটনার পর শাহরুখ খান অনেক বেশি সতর্ক হয়ে যান। তিনি উপলব্ধি করেন, জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বও বেড়ে যায়। আবেগে বা রাগের বলে ভুল করলে তার পরিণতি খুবই খারাপ হতে পারে। পরবর্তী সময়ে তিনি কখনও এমন বেপরোয়া আচরণ করেননি। বরং ধীরে ধীরে তিনি পরিণত অভিনেতা ও দায়িত্বশীল তারকা হয়ে ওঠেন।
