স্টার জলসার পর্দায় আসছে 'মিলন হবে কতদিনে'। আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। এই ধারাবাহিকের হাত ধরে আবারও ছোটপর্দায় ফিরছেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। তাঁর চরিত্র থেকে একরত্তি মেয়েকে রেখে কাজে ফেরা, সবটা নিয়েই কথা বললেন আজকাল ডট ইন-এর সঙ্গে।
মিলন হবে কতদিনে গোরার কাকিমার ভূমিকায় ধরা দেবেন শ্রীময়ী। চরিত্রটা কেমন জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, ''দুষ্টু। আমি তো ভাল মানুষ করতে পারি না। আমি সবসময়ই বাজে মানুষের চরিত্রে পাঠ করি। আমাদের এখানে এক ধরনের টাইপকাস্ট হয়ে যায়। 'কাদম্বিনী' ধারাবাহিকে আমি ইতিবাচক চরিত্রে কাজ করেছিলাম। কিন্তু দেখলাম, মানুষ আমায় নেতিবাচক চরিত্রে বেশি নেয়। যাঁরা চিত্রনাট্যকার আছেন, যাঁরা আমায় ভেবে গল্পটা লিখছেন, তাঁদের কাছে কন্সেপ্ট একদম পরিষ্কার। চিত্রনাট্যকারের কাছে সবটা পরিষ্কার থাকলে কাজটা অনেক সহজ হয়। 'কৃষ্ণকলি'তে যে নেতিবাচক চরিত্রে কাজ করেছি, ওখানে ঠান্ডা লড়াই করতাম। 'কমলা'য় বোকা একটা চরিত্র ছিল। এখানে আবার একদম অন্যরকম। এই চরিত্রটা ভীষণ ড্রামা কুইন। একটা ছোট নেইলপলিশ হারিয়ে গেলেও 'ও বাবা, মা...' করে গোটা বাড়ির নজর কাড়বে। ছোট জিনিস, কিন্তু সেটা নিয়েও এমন করবে... অহেতুক ঢপ মেরে দেয়। খেতে ভালবাসে, অতিরিক্ত সাজে। সুযোগসন্ধানী। তোমার দ্বারা ওর কোনও কাজ হলে ওর কাছে তুমি ভাল, ওর কাজ না করলেই খারাপ। নইলেই পাল্টি খেয়ে যাবে। মুখ মিষ্টি কুচুটে আর কী।"
ইতিমধ্যেই শুটিং শুরু হয়ে গিয়েছে ধারাবাহিকের। কৃষভিকে রেখে কীভাবে সবটা ম্যানেজ করছেন? শ্রীময়ীর কথায়, "কোনওটা আমি ম্যানেজ করছি না। সময়ই ম্যানেজ করে দিচ্ছে। আমাকে কাজে বেরোতে, এটা বাস্তবতা। কাজ ছাড়া বাড়িতে বসে থাকা সম্ভব নয় আমার পক্ষে। সর্বোপরি, যাকে বিয়ে করেছি, সে ইন্ডাস্ট্রির এতদিনের একটা অংশ, তাই ও জানে কমিটমেন্টের গুরুত্ব কতটা। তবে হ্যাঁ, আগে যখন সিরিয়াল করতাম, তখন কৃষভি ছোট ছিল। এত বায়নাক্কা ছিল না। এখন ও বুঝতে শিখেছে যে মা বেরিয়ে যাচ্ছে। তাই ওর একটা বায়না আছে। ওকে খুবই মিস করব। কিন্তু কাজে তো বেরোতেই হবে। আমি সকালে যখন বেরোই তখন ও ঘুমায়। আর যখন ফিরি তখন ওর দিদা, বা বাবার কোলে দাঁড়িয়ে আমায় ওয়েলকাম জানায়। মা এসে গেলেই, আয় আয় করে ওই প্রথমে ডাকে। দেখতে দেখতে ওরও প্লেস্কুলে যাওয়ার সময় হয়ে এল। আমি তো তাই ভাবছি ওর ছোটবেলাটাই কেটে গেল চোখের নিমেষে। অ্যাডজাস্ট করে কাজ করছি। চাপ বেড়ে গেছে মায়ের। মা না বিয়ে বাড়ি যেতে পারছে, না কোথাও। আয়া, ন্যানিদের উপর ভরসা করে তো অতক্ষণের জন্য যাওয়া যায় না।"
এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল, মিলন হবে কতদিনে ধারাবাহিকটিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে শোলাঙ্কি রায় এবং গৌরব চট্টোপাধ্যায়কে। অ্যাক্রোপোলিস-এর প্রযোজনায় আসছে এই ধারাবাহিক। সেই বিষয়ে শ্রীময়ী জানালেন, এটা যেন তাঁর 'ঘরে ফেরা'। কারণ জানিয়ে বললেন, "অ্যাক্রোপোলিসে ফেরা মানে, আমার ঘরে ফেরা। আমার বিয়ে, বাচ্চা হওয়া সব কিছুর সাক্ষী ওরা। সাত মাস পর্যন্ত ওদের 'আকাশ কুসুম' ধারাবাহিকে কাজ করেছি। স্নিগ্ধাদি আমার কাছে মাতৃস্থানীয়া। আমার গর্ভাবস্থায় এত জটিলতা ছিল, উনি সবসময় সাপোর্ট করেছেন। কাউকে জানাইনি, যেদিন আমি জানতে পেরেছি, সেদিনই দিদিকে জানিয়েছিলাম। তখন থেকে উনি আমায় মানসিক ভাবে সমর্থন করে গেছেন। বলেছেন, নিজের যত্ন নে। কাজ থাকবে। কিন্তু কিছু হলে তুই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবি না। সেই সময় কাজ করতে গিয়ে কোনও অসুবিধা হয়নি। তাড়াতাড়ি প্যাকআপ হয়ে যেত। বৃষ্টি-রোদে বা বাইরে আউটডোর হলে আমায় না রাখার চেষ্টা করা হতো। আমি অনেকদিন ধরেই চেয়েছিলাম যে পুরনো ঘরে ফিরি। আর স্টার জলসাতেই পরপর কাজগুলো করেছি। ফলে 'মিলন হবে কতদিনে'র হাত ধরে বলতে পারেন, অ্যাক্রোপোলিসের সঙ্গে নতুন করে মিলন হয়েছে আর কী!
