আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রয়াত বলিউডের স্বর্ণযুগের অভিনেতা পরিচালক মনোজ কুমার। একাধারে সফল অভিনেতা, পরিচালক, গীতিকার মনোজ সাত সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার, দাদা সাহেব ফালকে এবং পদ্মশ্রীর মতো অসংখ্য সম্মান। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত দীর্ঘদিনের সহকর্মী এবং অভিন্ন হৃদয়বন্ধু প্রেম চোপড়াও। এতো বছরের সহকর্মী এবং বন্ধুকে হারিয়ে মর্মাহত ৮৯-এর প্রেম। কঠিন দিনে স্মৃতির পাতা থেকে তুলে আনলেন নানা কথা, উজাড় করে দিলেন বেদনার ঝুলি। শুনল আজকাল ডট ইন।


স্বাভাবিক ভাবেই প্রেম চোপড়ার গলায় বন্ধু বিয়োগের যন্ত্রণা। ফোনে যোগাযোগ করার সঙ্গে সঙ্গেই বললেন, “আজ আমার জন্য আজ খুবই শোকের দিন। আমার খুব কাছের বন্ধুকে হারালাম। দু'একটি ছবি বাদ দিলে ওঁর সব ছবিতেই আমি ছিলাম। এবং খুব ভাল ভাল চরিত্র আমাকে দিয়েছিলেন উনি। তবে শুধু সহকর্মী হিসাবে নয়, ব্যক্তিগত ভাবেও প্রিয় একজন মানুষকে হারালাম।”


অভিনেতা হিসাবে তো বটেই, পরিচালক হিসাবেও বহু ছবিতে মানুষের মন জয় করেছেন মনোজ। অধিকাংশ ছবিতেই ছিল দেশাত্মবোধের টান। সেকথাই ফিরে ফিরে এল প্রেম চোপড়ার গলায়। বললেন, “মনোজ কেবল একজন ভাল অভিনেতা বা ভাল পরিচালক ছিলেন না, মানুষ হিসাবেও অত্যন্ত ভাল ছিলেন। ওঁর প্রতিটা ছবিতেই জনগণের উদ্দেশে একটা বার্তা থাকত। আর সাধারণ মানুষও সেই বার্তা অনুসরণ করতেন। সেই জন্যই আজকের দিনেও ওঁর ছবি এত মানুষ পছন্দ করেন। আজকের প্রজন্মের অনেকেই ওঁর ছবি তৈরির শৈলীকে অনুসরণ করে, ভালবাসে।” আজও মনোজ কুমার যে সমান প্রাসঙ্গিক সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা।

স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অশীতিপর প্রেম বলেন, “সেই সময় ওঁকে সবাই বলিউডের সেরা পরিচালকের তকমা দিতেন। কিন্তু আমি বলব শুধু পরিচালক হিসাবে নয়, লেখক এবং অভিনেতা হিসাবেও মনোজ অসাধারণ ছিলেন। শহীদ ছবিটার কথাই যদি চিন্তা করেন, ছবিটির জন্য উনি কী করেননি। নিজের চরিত্রের উপর প্রচুর গবেষণা করেছিলেন মনোজ।” 

ব্যক্তিগত স্তরেও মনোজ কুমার এবং প্রেম চোপড়ার সখ্য ছিল সর্বজনবিদিত। প্রেমও অস্বীকার করলেন না সেকথা। তাঁর কথায়, “গোটা ইন্ডাস্ট্রিতেই ওঁর প্রচুর অবদান। আমি যখন প্রথম ছবি করতে আসি তখন আমি চাকরিরত। অভিনয় করব বলে চাকরি ছাড়তে হয়। অনেকের মতো আমার জীবনও বদলে যায় ওঁর সংস্পর্শে। প্রাণ সাহেব এক সময় শুধু ভিলেনের চরিত্রেই অভিনয় করতেন, ওঁকেও খুব সাহায্য করেছিলেন মনোজ।”

তবু শিল্পী মনোজ কুমারের থেকেও যেন ব্যক্তি মনোজ কুমার বেশি প্রিয় প্রেম চোপড়ার। ডাউন মেমরি লেনে হাঁটতে হাঁটতে অভিনেতা বলেন, “একেবারে মাটির মানুষ ছিলেন জানেন, এত উচ্চমানের শিল্পী হওয়ার পরেও কোনও অহংকার ছিল না। নিজের কাজে ডুবে থাকতেন। অন্যদের নিয়ে সমালোচনা করা একেবারে পছন্দ করতেন না। নিজেও অন্যদের নিয়ে কথা বলতেন না, কেউ বললেও শুনতেন না।”