না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ধর্মেন্দ্র। সমাপ্তি ঘটল বলিউডের একটি যুগের। ২৪ নভেম্বর দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতা। প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে শোকে কাতর বর্ষীয়ান অভিনেতা, পরিচালক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আজকাল ডট ইন-এর কাছে স্মৃতি হাতড়ে কী জানালেন?
ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণের খবর পেয়েই শোকে মুহ্যমান বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। স্মৃতি হাতড়ে বললেন, "ও আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। দিলীপ কুমার, মনোজ কুমার, দেব আনন্দ... সবাই স্তম্ভ ছিলেন। স্তম্ভ তো চিরকাল থাকে না। একদিন তো হেলে যাবেই। কাজটা থেকে যায়। মানুষের কর্মটাই মূল।" প্রিয় বন্ধুকে শেষ একবার দেখতে বাড়িতে বা শেষকৃত্যে যাবেন বলেই জানালেন এদিন।
বিশ্বজিৎ এদিন আরও বলেন, "ওর গোটা পরিবার আমার খুব কাছের। ববি তো আমার সামনে হল। মনে হয় এই তো সেদিনের কথা। শুটিং করছিলাম, ধর্মেন্দ্র এসে বলল আমার ছেলে হয়েছে। ছবির মতো সব মনে পড়ছে। গোয়াতে আমরা শুটিং করতে গিয়েছিলাম, সানি গিয়েছিল ওর বাবার সঙ্গে। তখন ও স্কুলে পড়ে। ওর মতো ছেলে হয় না। ইন্ডাস্ট্রির জন্য কী না করেছে। কাউকে ফেরায়নি কখনও। বিরাট মনের মানুষ। প্রথম দিন থেকেই আমার ওর সঙ্গে ভীষণ মিল হয়ে গিয়েছিল।"
প্রসঙ্গত, বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি 'অগ্নিযুগ দ্য ফায়ার' ছবিতে পাঞ্জাব কেশরীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ধর্মেন্দ্র। এখনও পর্যন্ত মুক্তি না পাওয়া ছবির শুটিংয়ের স্মৃতি হাতড়ে বর্ষীয়ান অভিনেতা এদিন বলেন, "কত মজা করত, জোকস্ বলত, মজার মজার কথা হতো। পুরনো দিনের কথা মনে পড়ত। আমি সেই সময় (অতীতে) মদ্যপান করতাম। শুটিংয়ের শেষে গোয়ার বিচে বসে আমরা মদ খেতাম। গোয়ার ফিশ কারি ওখানেই আনিয়ে খেতাম আমরা। ওর সঙ্গে আমার অনেক কিছু মিলত, তাই এত বন্ধুত্ব হয়েছিল। ওর মধ্যে মেকি ব্যাপার ছিল না, পছন্দও করত না। আমিও তাই। অহংকারী ছিল না একদমই। ভাল কাজকে প্রসংশা করতেন সবসময়। শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করল। ভীষণ সিরিয়াস ছিল কাজের ব্যাপারে। ডুপ্লিকেট নিত না অনেক সময়ই।"
এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল, কিছুদিন আগে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ধর্মেন্দ্রকে। সেই সময় সলমন খান থেকে শাহরুখ খান, আরিয়ান সহ অনেকেই হাসপাতালে আসেন অভিনেতাকে দেখতে। সানি দেওলকেও গাড়িতে গম্ভীর মুখে ঢুকতে দেখা যায় হাসপাতালে। অভিনেতাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। সেই সময় রটে গিয়েছিল তাঁর মৃত্যুর খবর। তবে সেটাকে ভুল প্রমাণ করে বাড়ি ফেরেন তিনি। তার দুই সপ্তাহের মধ্যেই ঘটে গেল অঘটন। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বলিউডের 'হিম্যান' ছিলেন তিনি। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন পাঞ্জাবের মানসপুত্র। উপহার দিয়েছেন 'শোলে' (১৯৭৫), 'চুপকে চুপকে' (১৯৭৫), 'ইঁয়াদো কি বারাত' (১৯৭৩), ইত্যাদির মতো ছবি। কাজ করেছেন 'রকি অর রানি কী প্রেম কাহানি', 'ইক্কিস' এর মতো সাম্প্রতিক ছবিতেও। যদিও 'ইক্কিস' এখনও মুক্তি পায়নি। আগামী ডিসেম্বর মাসে মুক্তি পাবে সেই ছবি।
