১৯৮২ সালে ‘খারিজ’ ছবিতে একসঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন অঞ্জন দত্ত এবং মমতা শংকর। এরপর এই তালিকায় রয়েছে ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘আহারে মন’, ‘পালান’-এর মতো ছবি। প্রত্যেক ছবিতে তাঁদের অভিনয় দর্শক এবং সমালোচক প্রশংসিত। প্রসঙ্গত, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পালান’ ছবিতে অঞ্জন-মমতাকে শেষ দেখা গিয়েছিল। ফের সেই জুটিকে ফেরাচ্ছেন পরিচালক সপ্তাশ্ব বসু। তাঁর পরিচালিত ছবি ‘দেরি হয়ে গেছে’-তে। সদ্য মুক্তি পেয়েছে সেই ছবির পোস্টার। 

 

 

 

প্রশ্ন নিয়ে আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল পরিচালক সপ্তাশ্ব বসু-র সঙ্গে। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন বয়স্ক মানুষদের সম্পর্ক নিয়ে যে ট্রেন্ড শুরু হয়েছে ছবির, জানি দেখা হবে তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কীভাবে? কতটা? বুঝিয়ে বললেন তিনি। সপ্তাশ্বর কথায়, “এটা কিন্তু স্রেফ বয়স্কদের প্রেমের উপাখ্যান নয়। স্রেফ প্রেমের ছবি। আমি অন্তত সেভাবে ভেবেছি। গল্পের খানিক আঁচ দিলে বুঝতে পারবেন।”

 

 

“ এই ছবিতে অঞ্জন দত্ত অভিনীত চরিত্রের নাম ‘ঋষি’। একসময়কার লালবাজারের দুঁদে পুলিশ অফিসার। কাজপাগল মানুষ ছিলেন কর্মজীবনে। কাজ টিনার জীবন জুড়ে এতটাই ছিল যে নিজের ব্যক্তিগত জীবন গুছোতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে সে। বিয়েও আর করা হয়ে ওঠেনি। যদিও ঋষি দুরন্ত প্রেমে পড়েছিল একবার।‘সংঘমিত্রা’-র। সেই নারীর চরিত্রেই রয়েছেন মমতা শংকর। যদিও পরিবারের চাপে ‘ঋষি’কে আর বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি ‘সংঘমিত্রা’-র। যাই হোক, বহু বছর পর একটি ঘটনার জেরে ‘সংঘমিত্রা’কে তীব্রভাবে মনে পড়ে ঋষির। শুরু হয় খোঁজ। জানা যায়, বর্তমানে স্বামীকে হারিয়েছেন ‘সংঘমিত্রা’। বোলপুরে একটি গেস্ট হাউজের কর্ণধার সে। খবর পেয়েই ছদ্মবেশে সংঘমিত্রাকে একবার দেখতে, সম্ভব হলে একটু কোটা বলার আকুল তাড়নায় সেখানে হাজির হয় ‘ঋষি’। কিন্তু ছদ্মবেশে! বহু বছর পর মুখোমুখি হয় দুই প্রাক্তন। এক সময়ে দুঁদে পুলিশ হয়েও ‘ঋষি’র মধ্যে যেমন ছেলেমানুষি রয়েছে পুরো মাত্রায়, সেখানে ‘সংঘমিত্রা’ নরম মনের মানুষ হলেও ভারি ব্যক্তিত্বপূর্ণ।  তারপর? তারপর কী হয় তাঁদের? আদৌ কি কোনও পরিণতি পেল এত বছরের অপূর্ণ থাকা তাঁদের প্রেম? সেই নিয়েই এগোবে এই ‘দেরি হয়ে গেছে’।”

 


সপ্তাশ্ব আরও যোগ করলেন, “এই যে এক ব্যক্তি বৃদ্ধ বয়সে পৌঁছে বহু বছর আগের তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুঁজছেন এবং তাঁর খোঁজ পেয়ে ছদ্মবেশে হাজির হয়েছেন তাঁর কাছে...এই গোটা বিষয়টাই তো খানিক ছেলেমানুষি। হৃদয়ে ছেলেমানুষি না থাকলে এরকম করা যায় নাকি? এগুলো তো করে কলেজ পড়ুয়ারা। তাই না? তাই এই ছবি ‘এল্ডারলি লভ স্টোরি’ হলেও ‘ভেরি ইয়ং অ্যাট হার্ট’। ঠিক এই কারণেই ‘দেরি হয়ে গেছে’ ইন্দ্রাশিস আচার্যের ‘গুডবাই মাউন্টেন’, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের এই রাত তোমার আমার শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতী-র মতো ছবির ঘরানায় পড়ে না। আর হৃদয়ের পাগলামোর গল্প বলবে এই ছবি, বৃদ্ধ বয়স মানেই যে হাতে হাত রেখে এক জায়গায় বসে প্রেমের দর্শন আওড়ানো...এরকম চিন্তাভাবনার কোনও জায়গাই কিন্তু নেই এই গল্পে।” সপাট মন্তব্য পরিচালকের।