পুজোর পর্দায় একের পর এক ছবি মুক্তির ভিড়ে পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবার দেখলেন ‘দেবী চৌধুরানী’। আর তাঁর ভাষায় — এই ছবিটিই যেন আভিজাত্যে সবচেয়ে এগিয়ে।
“কাহিনির বিচারে রিলিজের আগেই বাকি তিনটে ছবির থেকে আভিজাত্যে এগিয়ে ছিল এই ছবি,” লিখেছেন কৌশিক। “ক্লাসিক সাহিত্যের এমন জোর যে দুর্বল গ্র্যাফিক্সও এ ছবির রস পন্ড করতে পারেনি।”

অভিনয় নিয়ে তিনি একেবারে উদার প্রশংসা করেছেন — দর্শনা, অর্জুন, বিবৃতি ও শ্রাবন্তী — সকলের পরিশ্রম ও নিষ্ঠা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য যেন আলাদা উজ্জ্বলতায় ঝলমল করছে — “ভবানী পাঠককে বাস্তব করে দিয়েছেন তাঁর একাগ্রতায় ও অভিজ্ঞতায়। সংস্কৃত উচ্চারণেও তিনি যথেষ্ট যত্নশীল ছিলেন। ৪৫০টা ছবির পরও তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে প্রণাম।”

কৌশিক আরও লিখেছেন, “বড়পর্দায় বুম্বাদার উপস্থিতি বিশেষ একটা পরিমণ্ডল তৈরি করে। আর ভাবলে অবাক লাগে, বড়দিনেই এই মানুষটাই আবার হয়ে উঠবেন কাকাবাবু!”
তবে প্রশংসার মধ্যেও সমালোচনার সুর আছে — তিনি লিখেছেন, “বিবৃতিদের ডাবিংয়ে কাল্পনিক ভাষার অপটু আঞ্চলিকতার অনুকরণ আমার কানে লেগেছে।”
ছবির আবহ ও নেপথ্য বাচনভঙ্গীর কথা বলতেও ভোলেননি কৌশিক। “বিক্রমের আবহ ছবিকে প্রতি পদে সাহায্য করেছে। আর গৌতম ভট্টাচার্যের কণ্ঠে সেই বঙ্কিম ইউনিভার্স যেন আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে,” লিখেছেন তিনি।
চিত্রনাট্য, শিল্পনির্দেশনা ও সম্পাদনার প্রশংসাতেও তিনি খুশি মনে কলম চালিয়েছেন— “পরিচালক-চিত্রনাট্যকার সযত্নে কল্পনা, ইতিহাস ও উপন্যাসের যে বিনুনি বেঁধেছেন, তা বেশ রাজকীয়। শিল্পনির্দেশকের পরিশ্রম স্পষ্ট। আর সম্পাদক সুজয়ের অবদান প্রায় চিত্রনাট্যের সমান।”
নতুন প্রযোজকদের প্রতিও তিনি জানিয়েছেন কৃতজ্ঞতা — “ধন্যবাদ, নবাগত প্রযোজকদের, তাদের বাংলা সাহিত্যের প্রতি আনুগত্যের জন্য। আপনাদের স্বাগত বাংলা সিনেমার পরিবারে। এই পরিবারে মাঝে মাঝে বিতণ্ডা হবেই, কিন্তু সেটাই তো একসঙ্গে থাকার প্রমাণ।”
সবশেষে দর্শকদের উদ্দেশে তাঁর সরল, অথচ মর্মস্পর্শী অনুরোধ —“ 'দেবী চৌধুরানী' অবশ্যই দেখুন। পড়া থাকলেও দেখুন, না পড়া থাকলে তো অবশ্যই দেখবেন।”
পুজোর তৃতীয় ছবির পর এবার তাঁর নজর ‘ভানু সিংহ’র দিকে — “আগামীকাল দেখবো চতুর্থ ছবি। আমার ভানু সিংহ কিরকম রঘু ডাকাত হয়ে উঠলো, সেটাই দেখার অপেক্ষায় আছি।”
এক ঝলকে :দেবী চৌধুরানী' ছবি -
পরিচালনা: শুভ্রজিৎ মিত্র
অভিনয়ে: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, দর্শনা বণিক, অর্জুন চক্রবর্তী, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়।
বিশেষ উল্লেখ: বিক্রম ঘোষের সঙ্গীত, ও শিল্পনির্দেশকের নান্দনিক ছোঁয়া।
