বক্স অফিস রীতিমত তোলপাড় করছে 'ধুরন্ধর'। দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে ১০০০ কোটির দিকে। মুক্তির দুই সপ্তাহ পেরোনোর আগেই ৯২৫ কোটি টাকার দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে এই ছবি। কিন্তু একদিকে এই ছবি যখন বক্স অফিসে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে, তখন অন্যদিকে গুরুতর রোগে আক্রান্ত পরিচালক আদিত্য ধর! কী ঘটেছে? 

ডিস্লেক্সিয়ার রোগী ছিলেন আদিত্য ধর। পরিচালক নিজেই এই রোগের কথা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি জানিয়েছিলেন যে তাঁর এখানে অর্থাৎ বলিউডে আসার কথাই ছিল না। এমনকী তিনি বরাবরই পড়াশোনায় খারাপ ছিলেন এই সমস্যার কারণে। আদিত্য ধরের কথায়, 'আমার এখানে থাকার কথা ছিল না। এটা সম্পূর্ণ মিরাকেল যে আমি এখানে পৌঁছেছি আজ। আমি মারাত্মক রকম ডিস্লেক্সিক। পড়তে পারি বা। এমনকী আমার এখনও ২-৩ পাতা পড়তে সারাদিন লেগে যায়। পড়াশোনাতেও আমি ভীষন দুর্বল ছিলাম। কিন্তু নাটকে ভীষণ আগ্রহ ছিল আমার।' 

আদিত্য সেই সময় এও জানিয়েছিলেন যে ২০১৯ সালে 'উড়ি দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' ছবির হাত ধরে নয়। বরং ২০১৩ সালে বলিউডে ডেবিউ করার কথা ছিল। কিন্তু পারেননি। ফের ২০১৬ সালে তিনি চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও সাফল্য পান না। অবশেষে ২০১৯ সালে আত্মপ্রকাশ করেন পরিচালক হিসেবে। এরপর তাঁকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। 'উড়ি দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক', 'আর্টিকেল ৩৭০', 'ধুরন্ধর', ইত্যাদির মতো ছবি উপহার দিয়েছেন গত কয়েক বছরে। 

যদিও তাঁর ডিস্লেক্সিয়া কারণ ছিল না বলিউডে দেরি করে আত্মপ্রকাশ করার। বরং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে থেকেই তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে হয়েছিল। এই বিষয়ে আদিত্য জানিয়েছিলেন, 'আমায় একাধিকবার প্রতারিত হতে হয়েছিল। লোকজন আমার স্ক্রিপ্ট চুরি করে নিয়েছে, শেষ পর্যন্ত সেই স্ক্রিপ্ট দিয়ে ১০০ কোটির ছবি বানিয়েছে। আমি কতবার যে হাল ছেড়ে দিয়েছি। অনেক সময় তো ছবির শুটিং শুরু হওয়ার ১৫ দিন আগে সেই ছবি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।' ২০১৬ সালে তিনি 'রাত বাকি' নামক একটি ছবি বানানোর কথা ভেবেছিলেন ২০১৬ সালে। সেখানে ক্যাটরিনা কাইফের পাশাপাশি ফাওয়াদ খান ছিলেন। কিন্তু ওই বছরই উড়ি হামলা হওয়ার কারণে পাকিস্তানি তারকাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে ছবিটি আটকে যায়। এরপর সেই 'উড়ি' ছবির হাত ধরেই বলিউডে অভিষেক হয় আদিত্যর। 

প্রসঙ্গত, 'ধুরন্ধর' ছবিটি গত ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে। এই ছবিতে এমন এক ভারতীয় গুপ্তচর হামজার কথা উঠে এসেছে যিনি পাকিস্তানে দীর্ঘ সময় পড়ে থেকে সেখানকার একজন হয়ে দেশে নানা খবর পাঠাতেন। এই চরিত্রে দেখা গিয়েছে রণবীর সিংকে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন অক্ষয় খান্না, সঞ্জয় দত্ত, অর্জুন রামপাল, সারা অর্জুন, আর মাধবন, প্রমুখ। আগামী ১৯ মার্চ এই ছবির দ্বিতীয় ভাগ মুক্তি পাবে।