জীবনের শেষ ক’টা দিন কীভাবে কাটিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র? প্রয়াত অভিনেতার শেষ পোস্টেই ইঙ্গিত
ধর্মেন্দ্র
নিজস্ব সংবাদদাতা
২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৬ : ২৬
শেয়ার করুন
বলিউডের এক যুগের অবসান। প্রয়াত ধর্মেন্দ্র। দীর্ঘ লড়াই শেষ করে মুম্বইয়ে নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতা।
নেটমাধ্যমে আগাগোড়াই সক্রিয় ছিলেন ধর্মেন্দ্র। কখনও প্রিয় কবিতার পঙক্তি, কখনও আবার জীবনের খুঁটিনাটি ভাগ করে নিতেন অনুরাগীদের সঙ্গে। অভিনেতার ইনস্টাগ্রামে এখনও জ্বলজ্বল করছে তাঁর শেষ পোস্ট। ২৬ সেপ্টেম্বর ধর্মেন্দ্র তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন—নীল রঙের স্যুট পরে। মুখে সেই চেনা হাসি। সঙ্গে পোস্ট করেছিলেন হৃদয়ছোঁয়া একটি কবিতা, ‘আজকাল গাম-এ-দৌড়ান সে দূর, গাম-এ-দুনিয়া সে দূর... আপনে হি নাশে মে ঝুমতা হু।’ যার সারমর্ম— দুঃখ, পৃথিবীর আদবকায়দা, আর কিছুই ছুঁতে পারে না তাঁকে। নিজের মতো করে হয়তো নিজেকে নিয়েই মগ্ন ছিলেন অভিনেতা।
এটিই ছিল শেষবারের মতো তাঁর গভীর অনুভূতির প্রকাশ। তাঁর জীবন-দর্শন। শারীরিক দুর্বলতার মাঝেও আত্মমগ্ন হয়েই শেষ কয়েকটা দিন কাটিয়ে নিতে চেয়েছিলেন অভিনেতা। তখন থেকেই তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল।
ছয় দশকেরও বেশি বিস্তৃত তাঁর অভিনয়জীবনে ধর্মেন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন হিন্দি সিনেমার অন্যতম স্তম্ভ। কখনও অ্যাকশন-হিরো, কখনও মৃদুভাষী রোমান্টিক নায়ক, কখনও আবার নিখাদ কমেডি—সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাঁর উপস্থিতিই সাফল্যের সংজ্ঞা বুঝিয়েছিল এক প্রজন্মের বলিউডকে।
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" target="_blank" rel="noopener">A post shared by Dharmendra Deol (@aapkadharam)
ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণে বলিউড থেকে শুরু করে সমগ্র দেশজুড়ে শোকের ঢেউ নেমে আসে। মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইনস্টাগ্রাম পোস্টটি আবার ভাইরাল হয়ে ওঠে, যেখানে অনুরাগীরা স্মৃতিচারণায় ভাসিয়ে দেন মন্তব্যবিভাগ—শেয়ার করেন তাঁর কিংবদন্তি চরিত্রগুলোর সংলাপ।
এক মহাতারকাকে হারাল বলিউড। তাঁর মতো বহুমাত্রিক অভিনেতা বলিউডে খুব কমই দেখা গিয়েছে বলে মত অনুরাগীদের।
১৯৬০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিল ভি তেরা হম ভি তেরে’ -র মাধ্যমে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। তারপর একে একে ‘ফুল অউর পাত্থর, ‘অনুপমা’, ‘বন্দিনী’, ‘আয়ে দিন বাহার কে’, ‘সীতা অউর গীতা’, ‘ইয়াদোঁ কি বারাত’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘শোলে’, ‘দোস্ত’, ‘জুগনু’— একের পর এক ছবিতে তিনি যেন নিজের প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন।
ধর্মেন্দ্রর সুদর্শন চেহারাই যেন তাঁকে কয়েক যোজন এগিয়ে রেখেছিল তাঁর সমসাময়িকদের থেকে। বিশেষ করে ‘শোলে ’ ছবির বীরু চরিত্র তাঁকে অমর করে রেখেছে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে। নায়কের অনায়াস হাসি থেকে প্রেমাতুর চাউনি আর নায়কোচিত সংলাপ— তাঁকে গোটা এক প্রজন্মের কাছে ‘হিরো’ করে তোলে।
চলতি মাসের শুরুতে ধর্মেন্দ্রর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন জানা গিয়েছিল, তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং কিছু সময়ের জন্য ভেন্টিলেটর সাপোর্টও দেওয়া হয়েছিল। সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে এসেছিলেন অভিনেতা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। থামল দীর্ঘ লড়াই। চলে গেলেন ধর্মেন্দ্র। রয়ে গেল তাঁর স্মৃতি, অমলিন হাসি।