না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন ধর্মেন্দ্র। কিংবদন্তি অভিনেতার প্রয়াণে গভীর শোকাহত বিনোদন জগৎ। তাঁর স্মৃতিচারণায় ভাসছেন ভক্ত থেকে তারকা মহল। এমন দিনে সামনে এসেছে বলিউডের হি-ম্যানের জীবনের এক আবেগপ্রবণ ঘটনাও।
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বরাবরই পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ধর্মেন্দ্রর। দুই ভাইয়ের অটুট বন্ধন নিয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির সকলেই। শুধু তাই নয়, তাঁর অভিনেতা হওয়ার অনুপ্রেরণাও যে দিলীপ কুমার, তাও বহু সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। আর সেই ‘আইডল’-এর বাড়িতেই রীতিমতো গোপনে ঢুকে পড়েছিলেন ‘বীরু’। অভিনয় জীবনে আসার প্রায় ছয় বছর আগে এমন এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন তিনি।
সালটা ছিল ১৯৫২। ধর্মেন্দ্র তখন পঞ্জাবের এক ছোট শহরের কলেজ ছাত্র। সেই সময় দিলীপ কুমারের 'শহীদ' ছবিটি দেখে তিনি এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যে তাঁর মনে এক অদ্ভুত ধারণা জন্ম নেয়-তিনি এবং দিলীপ কুমার যেন দুই ভাই। আবেগপ্রবণ ভাবনার বশবর্তী হয়ে লুধিয়ানা থেকে সোজা মুম্বই আসেন ধর্মেন্দ্র। এমনকী বান্দ্রায় দিলীপ কুমারের বাড়িতেও পৌঁছে যান। ধর্মেন্দ্র সাহস করে সেই বাড়িতে ঢুকে দেখেন তাঁর আইডল দিলীপ কুমার সোফায় ঘুমোচ্ছেন।
কিন্তু তখনই হঠাৎ জেগে উঠে অচেনা মানুষকে এভাবে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে হতবাক হয়ে যান দিলীম কুমার এবং জোরে পরিচারককে ডাকেন। ধর্মেন্দ্র এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যান। পরে তাঁর উপলব্ধি হয়, একজন তারকার ব্যক্তিগত পরিসরে এইভাবে ঢুকে পড়াটা তাঁর মস্ত ভুল হয়েছে।
ঘটনার ছয় বছর পর ধর্মেন্দ্র আবার মুম্বই ফিরে আসেন এবং ফিল্মফেয়ার‑ট্যালেন্ট কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় জেতার মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করে তিনি ফের দিলীপ কুমারের সাক্ষাৎ পান। যদিও তখন পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। দিলীপ কুমার তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। আপন করে নিয়ে বড় ভাইয়ের মতো স্নেহের সঙ্গে নিজের অভিনয় জীবনের সংগ্রামের কথা শোনান। ধর্মেন্দ্র অবাক হয়ে শোনেন তার ‘হিরো’র কথা।
ধর্মেন্দ্র এবং দিলীপ কুমারের এই বন্ধন যে নিছক সহকর্মী বা আইডল-অনুরাগীর নয়, বরং তা ছিল পারিবারিক ভালোবাসার, তার প্রমাণ মেলে সাইরা বানুর বক্তব্যেও। তিনি জানান, দিলীপ কুমার ধর্মেন্দ্রকে ছোট ভাইয়ের মতোই দেখতেন।
