বলিউডের 'খলনায়ক' সঞ্জয় দত্ত ২০২০ সালে নিজেকে ক্যানসার-মুক্ত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই লড়াইয়ের শুরু হয়েছিল একেবারে লকডাউনের মধ্যে। এক সাধারণ দিনে নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে হঠাৎই ধরা পড়ে তাঁর অসুখ। এক্স-রেতে দেখা যায়, ফুসফুসে জল জমে অর্ধেকেরও বেশি ঢেকে গেছে। প্রথমে চিকিৎসকেরা টিবি ভেবেছিলেন, কিন্তু রিপোর্ট হাতে আসতেই ধরা পড়ল— সেটা ক্যানসার।

 

সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় জানান, খবরটা শুনে তিনি মুহূর্তে ভেঙে পড়েছিলেন। “দুই-তিন ঘণ্টা শুধু কেঁদেছিলাম। মাথায় শুধু ঘুরছিল সন্তানদের কথা, স্ত্রীকে নিয়ে চিন্তা, আমার জীবন... তারপরই নিজেকে শক্ত করলাম। ঠিক করলাম দুর্বল হব না।”

 

 

প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল আমেরিকায় চিকিৎসা করাবেন সঞ্জয় দত্ত। কিন্তু ভিসা না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। সেই সময়ে এগিয়ে আসেন রাকেশ রোশন— যিনি নিজেও ২০১৮ সালে গলার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। তাঁর সাহায্যেই দুবাইতে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা শুরু হয় সঞ্জয়ের।

 

চিকিৎসকরা সঞ্জয়ই দত্তকে সতর্ক করেছিলেন, ক্যানসারের চিকিৎসা করাকালীন বিশেষ করে কেমোথেরাপির ফলে চুল পড়বে, বমি হবে, শারীরিক অবসাদ গ্রাস করবে। কিন্তু সঞ্জয় দত্ত সোজাসাপ্টা বলেছিলেন, “আমার কিচ্ছু হবে না। আমি চুল কামাব না, বমি করব না, বিছানাতেও পড়ে থাকব না।” 
নিজের কথার সঙ্গে কাজও মিলিয়েছিলেন 'মুন্নাভাই'। প্রতিটি কেমোর পরও তিনি সাইকেলে ঘণ্টাখানেক চড়তেন, কখনও ব্যাডমিন্টন খেলতেন টানা দুই-তিন ঘণ্টা। এই দৃঢ় মনোবলেই তিনি ক্যানসারকে হারিয়েছিলেন।


আজ সম্পূর্ণ সুস্থ সঞ্জয় দত্ত, বলিউডে পুরোদমে কাজেও ফিরেছেন। সম্প্রতি টাইগার শ্রফের 'বাগি ৪'-এ প্রধান খলনায়কের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। সঞ্জয় দত্তের ক্যানসারজয়ী কাহিনি শুধু বলিউড নয়, জীবনের মঞ্চে লড়াই করা প্রত্যেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা।