পাপারাজ্জি এবং জয়া বচ্চন। এ যেন আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্কের অন্যতম উদাহরণ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পাপারাজ্জির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তেমনই ইঙ্গিত দেন অভিনেত্রী। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত যাঁরা তারকাদের লেন্সবন্দি করতে দিগবিদিক ছুটে বেড়ান, তাঁদের সঙ্গে নিজের সমীকরণকে একটি শব্দেই বেঁধে দিয়েছেন তিনি— ‘শূন্য’।
এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অশোক পণ্ডিত এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
ইনস্টাগ্রামে একটি নোট শেয়ার করে অশোক লিখেছেন, “জয়া বচ্চনজির পাপারাজ্জি-বিরোধী বক্তব্যে অভিজাত দম্ভের গন্ধ রয়েছে। কিছু আক্রমণাত্মক পাপারাজ্জির আচরণ সমালোচনা করা এক বিষয়, কিন্তু গোটা পেশাকেই খাটো করা এবং তাতে শ্রেণিবৈষম্যমূলক মন্তব্য যুক্ত করা—এটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির এত সিনিয়র সদস্য এবং একজন সংসদকে মানায় না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “পাপারাজ্জিরাও পরিশ্রমী। বহু সময়ে তারকারা বা তাঁদের পিআর টিম নিজেরাই তাঁদের ডাকেন। এই সংস্কৃতি নিয়ে যদি কারও এত আপত্তি থাকে, তাহলে বাইরের দিকে আঙুল তোলার আগে নিজের দিকে তাকানো উচিত।”
শুধু অশোক পণ্ডিত নন, বহু নেটিজেনও জয়া বচ্চনের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন এবং সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এক সাক্ষাৎকারে পাপারাজ্জি সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে জয়া বলেন, “মিডিয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভাল। মিডিয়াই আমায় তৈরি করেছে। কিন্তু পাপারাজ্জির সঙ্গে আমার সম্পর্ক একেবারে শূন্য বললেই চলে। এরা কারা? এরা কি এই দেশের মানুষের প্রতিনিধি হওয়ার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত? আপনারা এদের মিডিয়া বলেন? আমার বাবা সাংবাদিক ছিলেন, আমি সেই মানুষদের সম্মান করি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “কিন্তু বাইরে যারা টাইট, নোংরা প্যান্ট পরে মোবাইল হাতে দাঁড়িয়ে থাকে—এরা ভাবে মোবাইল আছে বলে যে কারও ছবি তুলবে, যা খুশি বলবে। এদের মন্তব্য শোনেন? কী ধরনের মানুষ এরা? কোথা থেকে আসে, কী ব্যাকগ্রাউন্ড? শুধু ইউটিউব বা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে পারলেই কি এরা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করবে?”
জয়া বচ্চনের এই কঠোর মন্তব্যের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা রকম প্রতিক্রিয়া এবং সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
জয়া বচ্চন মানেই রাখঢাক ছাড়া কথা—যা মনে করেন, তা নির্দ্বিধায় বলার স্বভাব। কারও ভাল লাগল কি খারাপ লাগল, সেই ভাবনা তাঁর বিচারবোধকে কখনও বেঁধে রাখতে পারে না। নিজের মতামত তিনি পরিষ্কার, দৃঢ় ভাষায় প্রকাশ করেন। বলিউড, গণমাধ্যম কিংবা রাজনীতি—কোনও ক্ষেত্রেই সত্য কথা বলতে তিনি পিছপা নন। কিন্তু এ বার সেই স্বভাবই আরও একবার বিতর্কের জন্ম দিল। সমালোচনার জবাব কি দেবেন জয়া? এখন সেটাই দেখার।
