মহিলাদের দেহ ব্যবসার কাজে যুক্ত করার জন্য ধৃত অভিনেত্রী অনুষ্কা মণিমোহন দাস। বাংলা ছবি 'লোফার'-এ কাজ করেছিলেন অভিনেত্রী। সানি সিং, মিকা সিং, উদিত নারায়ণের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্মও করেন অনুষ্কা। বাঙালি অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে এই যৌন চক্রের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছে। মুম্বইয়ের ঠাকুর মলে অভিযান চালিয়ে এই সেক্স ব়্যাকেটের হদিশ মিলেছে বলে খবর।
জানা যাচ্ছে, অনুষ্কার সঙ্গে এই গোপন ব়্যাকেটে নাম জড়িয়েছে আরও দুই ছোটপর্দার অভিনেত্রীর। অনুষ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অভিনয় জগতে কাজের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের ফাঁদে ফেলতেন। পরে সেই মেয়েদের বাধ্য করা হত যৌন ব্যবসায় নামতে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ একটি ফাঁদ পাতে। ছদ্মবেশী ক্রেতা পাঠানো হয় এবং মুম্বই–আহমেদাবাদ মহাসড়কের ধারে কাশিমিরার ঠাকুর মলে অনুষ্কাকে হাতেনাতে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, ওই সময় তিনি টাকা নিচ্ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকেই দুই তরুণী অভিনেত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তাঁরা নাকি জনপ্রিয় ধারাবাহিক ও বাংলা ছবিতে কাজ করেছেন।
অভিযুক্ত অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির মানবপাচার সংক্রান্ত ধারা এবং অশ্লীল ব্যবসা প্রতিরোধ আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মুম্বই সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া নারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে তাঁরা মানসিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের সুযোগ পাবেন।
পুলিশ কমিশনার মদন বল্লালের কথায়, “মামলা রুজু হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি এর সঙ্গে আরও কারা যুক্ত আছেন এই চক্রের সঙ্গে।”
পুলিশের অ্যান্টি–হিউম্যান ট্রাফিকিং সেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এ ধরনের প্রতারণামূলক চক্র ধ্বংস করার জন্য তাদের অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই থানে থেকে আরেক পাচারকারী মহিলাকে গ্রেপ্তার করে এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও সামনে এল অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার নামে কীভাবে তরুণীদের জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে। অভিনয় জগতে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে অপরাধীরা তাদের দুর্বলতাকে কাজে লাগাচ্ছিল। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে অন্তত দুই তরুণী মুক্তি পেলেও, তদন্তকারীদের মতে এর পিছনে আরও বড় নেটওয়ার্ক সক্রিয় থাকতে পারে।
থানে পুলিশের এ অভিযান প্রমাণ করল যে যৌন ব্যবসার ব়্যাকেট যেভাবেই ছদ্মবেশ নিক না কেন, সতর্কতা আর পরিকল্পিত পদক্ষেপের মাধ্যমে তা ধ্বংস করা সম্ভব। উদ্ধার হওয়া অভিনেত্রীদের নিরাপদ ভবিষ্যতের ব্যবস্থা যেমন করা হচ্ছে, তেমনি অপরাধীদেরও আইনের জালে টেনে আনার চেষ্টা চলছে।
