‘কাগজ আছে, কাগজ দেখাব’—এই লাইন ঘিরে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল অনির্বাণ ভট্টাচার্যের গাওয়া একটি গান। বিতর্ক তৈরি করা সেই গানের কথাই যেন এবার অভিনেতা-গায়কের জীবনে অন্য রকম তাৎপর্য পেল। কারণ ভোটার তালিকার বিশেষ যাচাই প্রক্রিয়া বা এসআইআর (SIR)-এর শুনানিতে অনির্বাণকে ডাকার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ভোটার এনুমারেশন ফর্ম পূরণের সময় ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে কোনও লিঙ্ক দেখাতে না পারায় তাঁর নামও শুনানির জন্য বিবেচিত হচ্ছে। সেই সময়কার ভোটার তালিকায় অনির্বাণের মা-বাবা কিংবা ঠাকুরদা-ঠাকুমার কারও নাম নথিভুক্ত নেই। তবে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর মা-বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসেই অভিনেতা-পরিচালকের পিতৃবিয়োগ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই সংশ্লিষ্ট নথি যাচাইয়ের জন্য সশরীরে হাজির হয়ে কাগজপত্র দেখানোর নির্দেশ আসতে পারে তাঁর কাছে। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোনও নোটিস অভিনেতার কাছে পৌঁছয়নি।
নথি অনুযায়ী, মেদিনীপুরের শরৎপল্লিতে ১৯৮৬ সালের ৭ অক্টোবর জন্ম অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। বর্তমানে কাজের জন্য তিনি কলকাতার গড়িয়ায় মা ও বোনের সঙ্গে থাকলেও তাঁর ভোটার পরিচয় এখনও মেদিনীপুর শহরের সঙ্গেই যুক্ত। মেদিনীপুর পৌরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ২৯৯ নম্বর বুথে তাঁর নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে। সাম্প্রতিক এনুমারেশন ফর্ম তিনি জমা দিলেও ২০০২ সালের নথিভুক্তির প্রমাণ না থাকায় শুনানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
অনির্বাণ বরাবরই বাংলা বিনোদন জগতের এমন এক মুখ, যিনি শুধু অভিনয়েই নয়, নিজের বক্তব্য, গান ও সামাজিক অবস্থানের জন্যও বারবার চর্চায় উঠে এসেছেন। থিয়েটার থেকে সিনেমা, আবার মঞ্চ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, সব জায়গাতেই তিনি স্পষ্টভাষী ও আপসহীন মনোভাবের জন্য পরিচিত। আর সেই কারণেই তাঁর নাম জড়ালেই কোনও বিষয় সাধারণ থাকছে না, বিতর্ক তৈরি হচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই।
বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে কারণ অনির্বাণ নিজেই সম্প্রতি একটি ব্যঙ্গাত্মক গানে ‘কাগজ দেখানো’ প্রসঙ্গ তুলে ধরেছিলেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বাস্তবে সেই গানেই উচ্চারিত কথাগুলো যেন এবার তাঁর জীবনেই ফিরে এসেছে, এমন মন্তব্য করছেন অনেকেই।
নানা সময়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ও মতামতের কারণে বিতর্কের শিরোনামে এসেছেন অনির্বাণ। তবে সব পরিস্থিতিকেই নিজের মতো করে সামলে নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন অভিনেতা। বিতর্ক যতই থাকুক, জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি তাঁর।
