বলিউড তারকা আলিয়া ভাট শুধু বড় পর্দাতেই নয়, বাস্তব জীবনেও বড় মনের পরিচয় দিয়েছেন একাধিকবার। অনেকেই জানেন না, বছর কয়েক আগে ২০১৯ সালে জন্মদিনের ক’দিন আগেই নিজের ব্যক্তিগত ড্রাইভার সুনীল ও পরিচারিকা অনমোলকে ৫০ লক্ষ টাকা করে উপহার দিয়েছেন অভিনেত্রী— যেন তাঁরা নিজেদের একটি করে বাড়ি কিনে এক নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।
জানা গিয়েছিল, আলিয়া এই বড় সিদ্ধান্তটি আলিয়া নিয়েছিলেন মার্চের মাঝামাঝি, সে বছরের নিজের জন্মদিনের কিছুদিন আগেই। সুনীল ও অনমোল— এই দু’জনেই আলিয়ার সঙ্গে রয়েছেন সেই ২০১২ সাল থেকে, যখন তিনি ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ দিয়ে বলিউডে অভিষেক করেছিলেন। সুনীল তারপরেই জুহু গলিতে আর অনমোল খার দান্ডা এলাকায় একটি করে ফ্ল্যাট বুকিং করে ফেলেছিলেন।
জুহুতে আলিয়ার ১৩ কোটির ফ্ল্যাট ঘিরে জল্পনা চলেছিল প্রথমে। অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, হয়তো রণবীর কাপুরের সঙ্গে ‘লাভ নেস্ট’ তৈরি করছেন তিনি। কিন্তু সে জল্পনা একেবারেই উড়িয়ে দিয়ে আলিয়া বলেছিলেন, “না না, এটা আমার নতুন প্রোডাকশন হাউজের অফিস স্পেস। আমি এটার্নাল সানশাইন প্রোডাকশনস নামের নিজের প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেছি।”
তিনি তখন আরও বলেছিলেন, "আমি যে বাড়িতে থাকি তা একদম আমার নিজের হাতে গড়া। ইচ্ছে করেই বাবা-মার কাছাকাছি থেকে যাই। প্রতিটা আসবাব, প্রতিটা কোণ আমি নিজে সাজিয়েছি। ওটাই আমার বাড়ি, সেটা বদলাবে না।"এই ঘটনা শুধুই টাকা নয়—একটি আন্তরিক সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি, যা আজকের তারকাদের ভিড়ে আলিয়াকে আরও অনন্য করে তোলে। বর্তমানে চলচ্চিত্র দুনিয়াতেও আলিয়া একের পর এক ব্যস্ত প্রজেক্টে কাজ করছেন।
সম্প্রতি, আলিয়া ভাটের প্রাক্তন ব্যক্তিগত সহকারী বেদিকা প্রকাশ শেট্টিকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করল মুম্বই পুলিশ। অভিযোগ, অভিনেত্রীর প্রোডাকশন সংস্থা ইটারনাল সানশাইন প্রোডাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড-এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত হিসেব থেকেও চালাকি করে মোট ৭৬.৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের অগস্ট—এই দীর্ঘ সময় ধরে চলেছে বেদিকার কুকীর্তি। এই টাকা তছরুপ কেলেঙ্কারির বিষয়টি সামনে আসে, যখন আলিয়ার মা তথা অভিনেত্রী-পরিচালক সোনি রাজদান গত ২৩ জানুয়ারি জুহু থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই শুরু হয় তদন্ত এবং প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ বেদিকা শেট্টির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে।
তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০২১ থেকে ২০২৪—এই তিন বছর ধরে আলিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন বেদিকা। অভিনেত্রীর আর্থিক নথি, বিল, পেমেন্ট থেকে শুরু করে সময়সূচি—সবই ছিল তাঁর হাতে। এই সুযোগেই জালিয়াতি চালান তিনি।পুলিশ জানিয়েছে, বেদিকা শেট্টি ভুয়ো বিল তৈরি করে সেগুলিতে আলিয়ার সই করিয়ে নিতেন। কখনও বলতেন, এগুলো নাকি ভ্রমণ খরচ, কখনও মিটিং বা অন্যান্য কাজের খরচ। কিন্তু আসলে সেই সব খরচ ছিল সম্পূর্ণ সাজানো। এই ভুয়ো বিলগুলোকে বাস্তবিক দেখাতে তিনি ব্যবহার করতেন নানা প্রফেশনাল টুল। টাকা যেত এক ‘বন্ধুর’ অ্যাকাউন্টে—যেখান থেকে তা ঘুরপথে ফেরত আসত বেদিকার নিজের হাতে।
