বলিউডে ‘নায়ক’ শব্দের সংজ্ঞা কি বদলে যাচ্ছে? এখনকার অভিনেতারা কি আদৌ সেই অর্থে ‘পুরুষ চরিত্র’ ফুটিয়ে তুলতে পারছেন? সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে ঠিক এই প্রশ্নই সামনে আনলেন অজয় দেবগণ। বর্তমান প্রজন্মের অভিনেতাদের নিয়ে নিজের পর্যবেক্ষণ সরাসরি শুনিয়েছেন এই তারকা।

 

বলিউডের অন্যতম ব্যস্ততম তারকা অজয় দেবগণ। অভিনেতার হাতে থাকা ছবির লম্বা তালিকা প্রমাণ করছে, আগামী দু’বছর এক মুহূর্তও ফাঁকা নেই তাঁর কাজের ক্যালেন্ডারে।  সেরকম তারকা ‘নায়ক’ শব্দের সংজ্ঞা  ব্যবচ্ছেদ করে জানিয়েছেন, পুরুষত্ব কখনওই শুধু শরীরচর্চা বা পেশি তৈরি করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর মতে, একজন অভিনেতাকে ‘পুরুষ’ করে তোলে তাঁর অ্যাটিটিউড, উপস্থিতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা। এই প্রসঙ্গে তিনি বললেন,“আজকের বলিউডে ডমিনেটিং মেল পার্সোনালিটি খুব একটা চোখে পড়ে না। সবাই যেন শুধু ছেলে! পুরুষ নয়। আগের প্রজন্মে আমরা পুরুষদের দেখেছি। এমনকী আমার প্রজন্মেও- জ্যাকি শ্রফ থেকে অমিতাভ বচ্চন…ওঁরা সবাই পুরুষ ছিলেন।”

 

অজয়ের বক্তব্যে উঠে এসেছে এক প্রজন্মগত বদলের কথা। তিনি মনে করেন, আগের নায়কদের ক্ষেত্রে দর্শক চরিত্রের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারতেন। সেই প্রসঙ্গ তুলেই তিনি উল্লেখ করেন অক্ষয় কুমার ও সানি দেওলের কথা। অজয়ের কথায়, “অক্ষয় যখন একসঙ্গে দশজনকে মারধর করত, বা সানি দেওল যখন হ্যান্ডপাম্প তুলে ফেলত, দর্শক হাততালি দিত, কারণ আমরা বিশ্বাস করতাম ওঁরা এটা করতে পারে। আজকের প্রজন্মকে দেখে সেই বিশ্বাসটা আর আসে না।”

 

তবে তাঁর বক্তব্য কোনও নির্দিষ্ট অভিনেতাকে লক্ষ্য করে নয়, সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন অজয়। তাঁর মতে, গোটা প্রজন্মের লালন-পালন, মানসিকতা ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাওয়ার কারণেই এই রূপান্তর চোখে পড়ছে।
“আমি কোনও একজনকে উদ্দেশ্য করে এই কথাটা কিন্তু বলছি না। এটা একটা জেনারেশনাল চেঞ্জ। বড় হওয়ার পদ্ধতিতেই বদল এসেছে, আর তার প্রভাব পড়েছে আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে”, জানান তিনি।

 

এই মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই বলিউডে ‘পুরুষ নায়ক’ ধারণা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও অভিনয়ে বাস্তবতার প্রশ্ন ফের নতুন করে আলোচনায়। বদলে যাওয়া সময়ে দর্শকের প্রত্যাশাই কি পাল্টে গেছে, নাকি নায়কদের চরিত্রায়নেই ঘাটতি-এই বিতর্ক এখন ফের কেন্দ্রবিন্দুতে।

 

উল্লেখ্য, বর্তমানে পরিচালক জগন শক্তির সঙ্গে ‘রেঞ্জার’ ছবির শুটিং করছেন অজয়। এরপরেই শুরু হবে দুই কাল্ট ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন অধ্যায় ‘দৃশ্যম ৩’ আর ‘গোলমাল ফাইভ’। দু’টি ছবিই এখন চিত্রনাট্যের চূড়ান্ত খসড়া স্তরে রয়েছে।এরই মধ্যে জোর খবর, অজয় নাকি নতুন এক হরর-কমেডি ছবির জন্য জনপ্রিয় কন্নড় ছবি ‘সু ফ্রম সো’-এর পরিচালক জে.পি. তুমিনাডুর সঙ্গে গোপন বৈঠকে বসেছেন। অভিনেতার এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জনিয়েছে, অজয় সবসময়ই নতুন নতুন গল্প শুনতে আগ্রহী। তুমিনাডুর শোনা কনসেপ্ট ওঁকে ভীষণ টেনেছে। মজার ব্যাপার, অজয় এখনও পর্যন্ত ঠিকঠাক কোনও হরর-কমেডিতে সেভাবে দেখা দেননি। এই ছবির চিত্রনাট্য একেবারে তাঁর খোঁজ করা অন্য ঘরানার ছবির মধ্যেই পড়ছে।