বলিউডের অ্যাকশন হিরো হিসেবে অজয় দেবগণের খ্যাতি বহুদিনের। তাঁর বাবা, কিংবদন্তী অ্যাকশন ডিরেক্টর বীরু দেবগণের পুত্র হিসেবে, ১৯৯১ সালের ছবি 'ফুল অউর কাঁটে'-তে দুটি চলন্ত মোটরসাইকেলের উপর দুই পা ভর করে তাঁর আইকনিক এন্ট্রি আজও দর্শকদের মনে গেঁথে আছে। বহু বছর ধরে অজয় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্টান্ট করার জন্য পরিচিত।
সম্প্রতি, তাঁর 'দে দে প্যায়ার দে ২' ছবির সহ-অভিনেতা আর মাধবন একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনেন, যা অজয়ের সেই অবিচল প্রতিশ্রুতির কথা আরও একবার তুলে ধরে।
মাধবনের এই মন্তব্যের পরই অজয় দেবগণ নিজেই একটি সাক্ষাৎকারে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যখন অজয় একটি ছবির জন্য স্কাই ডাইভিং স্টান্ট করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি যখন সেই স্থানে পৌঁছন, দেখেন সেখানে পেশাদার স্টান্ট পারফর্মাররা আগে থেকেই মধ্য-আকাশে জাম্প করছিলেন। জায়গাটি স্কাই ডাইভিং বিশেষজ্ঞদের কাছে একটি জনপ্রিয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর মুহূর্তেই অজয় এমন কিছু দেখলেন, যা দেখে সবচেয়ে সাহসী পারফর্মারও কেঁপে উঠবেন। অজয় স্মরণ করে বলেন, "আমি পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই দেখলাম একজনের প্যারাস্যুট খোলেনি, এবং সে আমার চোখের সামনে নিচে পড়ে মারা গেল। আর এর পরের জন ছিলাম আমি।" দৃশ্যটি মনে করেও অজয়কে তখন দৃশ্যত প্রভাবিত দেখাচ্ছিল।
নিজের চোখের সামনে এই মারাত্মক দুর্ঘটনা দেখার পরেও, অজয় দেবগণকে স্টান্টটি সম্পূর্ণ করতেই হয়েছিল। এই জাম্প করার আগে তাঁকে একটি ভিডিও বিবৃতি রেকর্ড করতে হয়েছিল, যেখানে তিনি নিশ্চিত করেন যে তিনি স্বেচ্ছায় এই কাজটি করছেন। একই সঙ্গে তাঁকে জীবনের ঝুঁকি সংক্রান্ত বিস্তৃত সম্মতিপত্র বা আইনি নথিপত্রে সই করতে হয়েছিল।
অজয় আরও জানান, একই স্থানে হলিউড তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর সঙ্গেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল, তবে তাঁর প্রশিক্ষক তাঁকে বাঁচিয়ে নেন। অজয় বলেন, "সেখানে আপনি লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর একটি বার্তাও দেখতে পাবেন, যেখানে লেখা আছে, আমার জীবন বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ।"
এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার পরেও স্টান্ট করার অজয় দেবগণের এই অদম্য সাহসই প্রমাণ করে দেয় কেন তিনি বলিউডের অন্যতম নির্ভরযোগ্য অ্যাকশন হিরো হিসেবে পরিচিত।
