সামাজিক মাধ্যমে একটু ঘোরাফেরা করলেই চোখে পড়ছে এক চমকে যাওয়ার তো ভিডিও। জেমস ক্যামেরনের নতুন ছবি ‘অবতার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’-এ নীলচে নাভি রূপে ক্যামিও করেছেন বলিউড অভিনেতা গোবিন্দা! ঝলমলে ভারতীয় পোশাক, চেনা ভঙ্গি, চেনা উচ্চারণ সব মিলিয়ে ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এই ছবির একেবারে শেষে দেখা যাবে ‘হিরো নম্বর ওয়ান’-কে না কি বাস্তবটা পুরোপুরিই আলাদা?
আসলে যে ভিডিওটি ঘুরছে, সেটি পুরোপুরি এআই অর্থাৎ কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি। ছবির সঙ্গে তার কোনও সম্পর্কই নেই। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, গোবিন্দা আড্ডা দিচ্ছেন, কথা বলছেন তাঁর স্বকীয় মুম্বইয়া টানে, আর পেছনে দাঁড়িয়ে জেক সালি ও তার পরিবার! অথচ ছবিতে এমন কোনও দৃশ্য আদৌ নেই।
আসলে, এই এআই কনটেন্টের ভাবনাটা এসেছে গোবিন্দার এক পুরোনো দাবিকে ঘিরে। তিনি বহুবার বলেছেন, প্রথম ‘অবতার’ ছবি (২০০৯)-র সময় তাঁকে নাকি তাতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু চরিত্রের শারীরিক চাহিদা ও দীর্ঘ শুটিং শিডিউলের কারণে তিনি না করে দেন জেমস ক্যামেরন-কে। এমনকি তিনি দাবি করেছিলেন, ছবির এই নামটিও নাকি তাঁরই দেওয়া! পরে অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপও প্রকাশ করেছিলেন।
বাস্তবে অবতার বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসেই এক মাইলফলক হয়ে ওঠে। প্রথম ছবির আয় ছাড়ায় ২.৯২ বিলিয়ন ডলার, দ্বিতীয় ছবি ‘দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার’–এর আয়ও পেরোয় ২.৩ বিলিয়ন ডলার। এখন এই ফ্র্যাঞ্চাইজির তিন নম্বর ছবি অধ্যায় ‘ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’–রও দুর্দান্ত ওপেনিং হয়েছে।
জানিয়ে রাখা ভাল, গোবিন্দার অবতার দাবিকে অবশ্য একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা ভারতীয় সেন্সর বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি পহলাজ নিহালানি। ২০২৪ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সম্ভবত গোবিন্দা বিভ্রান্ত হয়েছেন। কারণ ‘অবতার’ নামেই তাঁদের একটি বলিউড প্রজেক্ট ছিল, যার ৪০ শতাংশ শুটিং হওয়ার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। সেখান থেকেই হয়তো অভিনেতার এই ভুল বোঝাবুঝির সূচনা।
সব মিলিয়ে বলা যায়, এই ‘নাভি গোবিন্দা’ এখন শুধুই সোশ্যাল মিডিয়ার বিনোদন ও এআই-দুনিয়ার নতুন খেলা। তবে এটাও আবার মনে করিয়ে দিল, ডিজিটাল যুগে দেখতে যা পাই, সবকিছুই সত্যি নয়!
