শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ধর্মেন্দ্র। মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। জানা গিয়েছে ভেন্টিলেশনে রয়েছেন পাঞ্জাবের মানসপুত্র। সোমবার, ১০ নভেম্বর রাতে সলমন খান থেকে শুরু করে শাহরুখ খান, আরিয়ান খান এক এক করে হাসপাতালে আসেন বর্ষীয়ান অভিনেতাকে দেখতে। অন্যদিকে তাঁর বাড়ির সামনে বসানো হয় ব্যারিকেড। এরপরই রটতে থাকে তাঁর মৃত্যুর ভুয়ো খবর। রাত পোহাতে, আরও একবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। মঙ্গলবার সকাল সকাল ফের রটে যায় ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর। আর বারংবার এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিনেতার বাড়ির লোকজন। হেমা মালিনী এদিন ক্ষোভ উগরে এক্স অর্থাৎ যা আগে টুইটার নামে পরিচিত ছিল সেখানে লেখেন, “যেটা ঘটছে যে ক্ষমার অযোগ্য। সংবাদমাধ্যম কীভাবে এভাবে ভুয়ো খবর ছড়াতে পারে তাও এমন একজনকে নিয়ে যিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন? এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ। পরিবারকে সম্মান দিন। আমাদের প্রাইভেসি দিন।”
এহেন আবহে ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে আবেগঘন একটি পোস্ট করলেন অমিতাভ বচ্চনের নাতি তথা অভিনেতা অগস্ত্য নন্দা। আর অগস্ত্যর এই পোস্ট ফের একবার ভাবিয়ে তুলেছে অসংখ্য নেটিজেনকে। উল্লেখ্য, মুক্তির অপেক্ষায় থাকা অগস্ত্যর বড়পর্দার প্রথম ছবি ‘ইক্কিস’-এ তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন ধর্মেন্দ্র।
সমাজমাধ্যমে তাঁর ধর্মেন্দ্র স্যারের উদ্দেশ্যে অগস্ত্য লিখলেন, “কিংবদন্তিদের কখনও মৃত্যু হয় না। তাঁরা বেঁচে থাকেন অসংখ্য হৃদয়ে, যেসব হৃদয়ে একবার তাঁরা ছুঁয়ে গিয়েছেন কখনও না কখনও। ধর্মেন্দ্র স্যার, ‘ইক্কিস’ ছবির শুটিংয়ে এম.এল ক্ষেত্রপাল হিসেবে আপনার উপস্থিতিটুকু ছিল যেমন শক্তিশালী তেমনই আবেগে ভরপুর। আপনার স্বল্প উপস্থিতিটির মধ্যেই ভালভাবে টের পেয়েছিলাম আমরা দয়া, মমতা এবং খাঁটি মনুষ্যত্ববোধের।
একটা গোটা প্রজন্ম আপনাকে দেখে ভর হয়েছে, আপনার সঙ্গে সঙ্গে বড় হয়েছে। আর এখন থেকে আমরা আপনাকে সবাই সম্মান এবং ভালবাসায় মুড়ে মনে রাখব। আমাদের যা দিয়েছেন, সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ। আপনি আমাদের মধ্যে সবসময় বেঁচে থাকবেন -সিনেমায়, গল্পে এবং হৃদয়ে।”
বলাই বাহুল্য, অমিতাভের নাতির এহেন পোস্ট দেখে ভুরু কুঁচকেছে অনেকের। ফের প্রশ্ন ঘুরপাক খাওয়া শুরু করেছে।
অন্যদিকে, ধর্মেন্দ্র মৃত্যু সম্পর্কিত এই ভুয়ো খবরে কেবল ড্রিমগার্ল নন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাঁদের মেয়ে এষা দেওলও। তিনি ইনস্টাগ্রামে স্টোরি শেয়ার করে লেখেন, 'সংবাদমাধ্যম বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে, ভুল খবর ছড়াচ্ছে। আমার বাবা স্থিতিশীল রয়েছেন, সেরে উঠছেন ধীরে ধীরে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি আমাদের পরিবারকে এই সময় প্রাইভেসি দেওয়ার জন্য। আপনাদের সকলের প্রার্থনার জন্য ধন্যবাদ। বাবা সেরে উঠছেন।'
প্রসঙ্গত, শ্রীরাম রাঘবনের পরিচালনায় আসছে যুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ইক্কিস’। ভারতের কনিষ্ঠতম পরমবীর চক্রজয়ী ভারতীয় জওয়ান অরুণ ক্ষেত্রপাল-এর জীবন অবলম্বনে তৈরি এই ছবি। ছবিতে অগস্ত্যের সঙ্গে থাকছেন ধর্মেন্দ্র ও জয়দীপ আহলাওয়াত। তবে এই সিনেমার মূল নায়ক অগস্ত্য। আর তার কাঁধে সেই চরিত্র, যিনি ভারতের ইতিহাসে রয়ে গেছেন সাহসিকতার চরম উদাহরণ হয়ে। ছবির প্রযোজক দীনেশ ভিজান ও ম্যাডক ফিল্মস ‘ইক্কিস’ নিয়ে লিখেছিলেন, “সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ইক্কিস। এক সাহসী সেনা ও পুত্রের গল্প। ভারতীয় সেনার গর্ব, অরুণ ক্ষেতরপালকে নিয়ে তৈরি এই যুদ্ধচিত্র।”
যুদ্ধের আবহে শুরু হয় ছবি ঘোষণার ভিডিয়ো। ১৯৭১ সালের বসন্তে যুদ্ধ চলাকালীন অরুণের মৃত্যুসংবাদ তাঁর বাবাকে জানানো চিঠির আবেগঘন পাঠে। তারপর একের পর এক ছায়াময় যুদ্ধদৃশ্য -বিস্ফোরণ, ধোঁয়ার মধ্যে শত্রুর মুখোমুখি অরুণ ক্ষেত্রপাল, অনড়, নির্ভীক, দেশভক্তিতে দীপ্ত। এই ইমোশন, এই গর্ব ‘ইক্কিস’ যেন শুধু অগস্ত্যর বলিউডে পা রাখার গল্প নয়, বরং এক সাহসী শহিদের আত্মবলিদানকে নতুন প্রজন্মের সামনে নিয়ে আসার অনন্য প্রয়াস।
