১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে জম্মু ও কাশ্মীরের আখনূরে সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বলিউড তারকা আমির খান। বিশেষ অনুষ্ঠান ‘জয় জওয়ান’-এর অংশ হিসেবেই এ সফর। সেই মঞ্চেই এক সেনা জওয়ান ছুঁড়ে দিলেন কৌতূহলোদ্দীপক প্রশ্ন— যদি ২০০১ সালের অস্কার-মনোনীত ছবি লগান আজ রিমেক হয়, ভুবনের চরিত্রে কাকে দেখা যাবে?

 

প্রথমে মুচকি হেসে আমিরের চটপটা জবাব— “কেন অন্য কাউকে দেব? আমিই করব!” কিন্তু খানিক ভেবে নিয়ে অভিনেতা-পরিচালক জানালেন নিজের ‘ড্রিম চয়েস’।আমিরের সোজাসাপ্টা উত্তর— “আমি ভুবনের চরিত্রে বেছে নিতাম ভিকি কৌশলকে।”

 

কেন তাঁর অন্যতম প্রিয় চরিত্রে তিনি নাম নিলেন ভিকির? সেই জবাবও দিলেন তিনি— “ভুবনের কয়েকটা বিশেষ গুণ আছে। তাঁর হৃদয় ভীষণ পরিষ্কার, যা ভিকির মুখ দেখলেই বোঝা যায়। দিল কা সঠিক বন্দা। দ্বিতীয়ত, ভুবনের ভিতরে পাহাড়ের মতো দৃঢ়তা আছে। তাঁর মধ্যে মর্যাদা আছে, আছে গুরুত্ববোধ, আবার মাঝে মাঝে ফুরফুরে চপলতা, ফাজলামোও— সবই ভিকির মধ্যে আছে।”

 

 

২০০১ সালের ‘লগান’-এ আমির নিজেই ছিলেন সেই ‘ভুবন’— চম্পানীড়ের এক দৃঢ়চেতা কৃষক, যিনি গ্রামবাসীদের নিয়ে গড়ে তোলেন এক ক্রিকেট দল, আর ডেভিড-ভার্সাস-গোলিয়াথ লড়াইয়ে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির অফিসারদের হারিয়ে ‘তিন গুণ লাগান’-এর বোঝা থেকে মুক্ত করেন গ্রামকে।

 

ভিকি কৌশলও এর আগে ‘ছাভা’, ‘স্যাম বাহাদুর’ ও ‘সর্দার উধম’-এর মতো ঐতিহাসিক ও পিরিয়ড ড্রামায় নজর কেড়েছেন।

 

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের জুন মাসে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। লগান: ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ইন্ডিয়া। পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকর, আর মুখ্যভূমিকায় আমির খান। গল্পের পটভূমি ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ— বিহারের আশেপাশে এক ছোট গ্রাম চম্পানীড় , যেখানে কৃষকদের উপর ব্রিটিশ শাসকের ‘তিনগুণ লগান’ অর্থাৎ করের বোঝা।

 

এই হতাশার আবহে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ওঠে এক কৃষক— ভুবন। ব্রিটিশ অফিসারের প্রস্তাবে তিনি রাজি হন ক্রিকেট খেলায় চ্যালেঞ্জ নিতে— জিতলে কর মুকুব, হারলে বোঝা হবে আরও বাড়তি। শুধু খেলার লড়াই নয়, এ ছিল সম্মান, স্বাধীনতার আগাম বার্তা এবং পরাধীন ভারতের সাধারণ মানুষের ঐক্যের কাহিনি।

 

‘লগান’ মুক্তির পরই ভারতীয় সিনেমায় ইতিহাস রচনা করে। বাণিজ্যিক সাফল্যের পাশাপাশি ছবিটি মনোনীত হয়েছিল সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কারের জন্য। এ ছবিতে এ আর রহমানের সঙ্গীত, অনিল মেহতার সিনেমাটোগ্রাফি আর কাস্টের অভিনয় আজও স্মৃতিতে রয়ে গেছে।

 

২৩ বছর পেরিয়ে গেলেও, ভুবনের সেই দৃঢ়তা আর ক্রিকেটের মাঠে স্বাধীনতার লড়াই— আজও ভারতীয় দর্শকের কাছে এক অমলিন প্রেরণা।