আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতে বাড়ি কেনা আজ আর কেবল মাথার উপর ছাদ তোলার স্বপ্ন নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ সৃষ্টির একটি বড় মাধ্যম। এই কারণে হোম লোনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকের পাশাপাশি হাউজিং ফাইন্যান্স কোম্পানি এখন ক্রেতাদের জন্য আকর্ষণীয় হোম লোন অফার করছে।


বর্তমানে HFC ৭.৪৫ শতাংশ সুদ থেকে শুরু করে হোম লোন দিচ্ছে, যা বড় বড় ব্যাংকের হারের সমান। তবে একটি বড় পার্থক্য হল—ব্যাংকের সুদের হার রিজার্ভ ব্যাংকের রেপো রেটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, কিন্তু HFC-র সুদের হার তেমন নয়। তাই নীতিগত পরিবর্তনের প্রভাব তাদের হারে দ্রুত প্রতিফলিত হয় না। তবুও বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে এবং ক্রেডিট স্কোর ভালো থাকা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে HFC যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক হার অফার করছে।

আরও পড়ুন: মহাকাশে দুর্লভ দৃশ্য: পাশাপাশি ছুটল দুটি ধূমকেতু


১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকার ২০ বছরের হোম লোনের সুদের হার ৭.৪৫ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তবে এই হার গ্রাহকের ক্রেডিট স্কোর, আয় এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হতে পারে। এখানে শীর্ষ HFC গুলির প্রস্তাবের তুলনা করা হল,
বাজাজ ফিনসার্ভ
বাজাজ ফিনসার্ভ বর্তমানে ৭.৪৫ শতাংশ সুদ থেকে হোম লোন দিচ্ছে। যদি কেউ ৫০ লাখ টাকা ২০ বছরের জন্য ঋণ নেন, তবে তাঁর মাসিক কিস্তি দাঁড়াবে 40,127।


এলআইসি হাউজিং ফাইন্যান্স
এলআইসি হাউজিং ফাইন্যান্সের প্রারম্ভিক সুদের হার ৭.৫০ শতাংশ। একই অঙ্ক ও মেয়াদের জন্য এখানে EMI হবে 40,280।


টাটা ক্যাপিটাল
টাটা ক্যাপিটালের হোম লোন শুরু হচ্ছে ৭.৭৫ শতাংশ সুদে। ৫০ লাখ টাকার ২০ বছরের লোনের EMI দাঁড়াবে 41,047।


পিএনবি হাউজিং ফাইন্যান্স
পিএনবি হাউজিং ফাইন্যান্স কিছুটা বেশি সুদে হোম লোন দেয়—শুরু ৮.২৫ শতাংশ থেকে। এখানে EMI দাঁড়াবে 42,603।


পিরামল ক্যাপিটাল অ্যান্ড হাউজিং ফাইন্যান্স
সবচেয়ে বেশি হার রয়েছে পিরামল ক্যাপিটালে। তারা ৯ শতাংশ সুদে হোম লোন দেয়। ৫০ লাখ টাকার ঋণের EMI দাঁড়ায় প্রায় 44,986।
HFC ও ব্যাংকের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল সুদের হার নির্ধারণের প্রক্রিয়ায়। ব্যাংকের হোম লোন রেপো-লিঙ্কড লেন্ডিং রেট এর সঙ্গে যুক্ত থাকায় RBI-এর নীতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই তা পরিবর্তিত হয়। অন্যদিকে, HFC-এর হার তেমনভাবে নড়ে না, বরং প্রতিযোগিতা এবং বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী সমন্বয় করা হয়।


তবে গ্রাহকের জন্য সবথেকে বড় ফ্যাক্টর হল ক্রেডিট স্কোর। কারো ক্রেডিট স্কোর ভালো হলে তিনি কম সুদে লোন পেতে পারেন, আবার স্কোর কম হলে সুদের হার বাড়তে পারে।


হোম লোন নেওয়ার আগে শুধু সুদের হার নয়, EMI-এর চাপ, প্রসেসিং ফি, প্রিপেমেন্ট চার্জ ইত্যাদিও বিবেচনা করা জরুরি। বাজাজ ফিনসার্ভ বা এলআইসি হাউজিং ফাইন্যান্সের মতো প্রতিষ্ঠান তুলনামূলকভাবে কম EMI অফার করছে, আবার টাটা ক্যাপিটাল ও পিএনবি হাউজিং ফাইন্যান্স মাঝামাঝি অবস্থানে। পিরামল কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও নির্দিষ্ট গ্রাহক প্রোফাইলের জন্য তাদের প্যাকেজ কার্যকর হতে পারে।


অতএব, বাড়ি কেনার পরিকল্পনা থাকলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফার যাচাই করে, নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী সেরা বিকল্পটি বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।