আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএনসিসিআই) কলকাতার বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গাপুজো প্রাঙ্গণে ৩৭তম ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ার (আইআইটিএফ)-এর পাশাপাশি সফলভাবে একটি শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করেছে। ১৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাণিজ্য মেলাটি ১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। বাণিজ্য, শিল্পে বৃদ্ধি এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই) ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত মূল বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার জন্য নীতিনির্ধারক, শিল্পপতি, কূটনীতিক এবং উদ্যোক্তাদের এক মঞ্চে এনেছে এই উদ্যোগ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য এবং নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডঃ শশী পাঁজা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ (এমএসএমই), কারিগর এবং সৃজনশীল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ব্রিটেন-সহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ককে জোরদার করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে আমরা হাওড়ার জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক, জেলাস্তরের শিল্প পার্ক এবং উদ্যোগগুলির জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের জমির পরিকাঠামো গড়ে তুলছি। পাশাপাশি অ্যামাজন এবং ফ্লিপকার্টের মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ই-কমার্স বাজার প্রবেশের সুযোগও নিশ্চিত করছি। আমাদের উদ্যোগগুলির লক্ষ্য হল বাংলার হস্তশিল্প, নকশার উৎকর্ষ এবং উৎপাদন শক্তিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেওয়া। একই সঙ্গে ঝাড়গ্রামের মতো অঞ্চলে উন্নয়নকে উৎসাহিত করা।”

পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার ডঃ অ্যান্ড্রু ফ্লেমিং অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই অর্থনৈতিক বাণিজ্য চুক্তিটি ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য একটি যুগান্তকারী ঘটনা, যেখানে প্রায় ৯৯ শতাংশ শুল্ক ক্ষেত্রে উদারীকরণ করা হয়েছে। যা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করেছে।” পশ্চিমবঙ্গ এবং পূর্ব ভারতের শক্তিশালী উৎপাদন ও কারুশিল্পের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “ব্রিটেনের উচ্চমূল্যের ভোক্তা বাজার এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিশ্বব্যাপী ব্যবসার প্রসারের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।” ডঃ ফ্লেমিং রপ্তানিকারক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং সৃজনশীল উদ্যোগগুলিকে বাণিজ্য চুক্তিকে কাজে লাগিয়ে টেকসই ব্যবসা গড়ে তুলতে, বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়াতে এবং বিশ্বজুড়ে সরবরাহ শৃঙ্খলে আরও অবদান রাখতে উৎসাহিত করেন।
বিএনসিসিআই-এর সভাপতি অশোক কুমার বণিক বলেন, “এই শিল্প সম্মেলন এবং ৩৭তম ইন্ডিয়ান ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ারটি নীতি নির্ধারক, শিল্প এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে শক্তিশালী সেতুবন্ধন তৈরির জন্য বিএনসিসিআই-এর ধারাবাহিক প্রচেষ্টারই প্রতিফলন। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই), উদ্ভাবক এবং ব্যবসা সংক্রান্ত সকলকে একত্রিত করে ভারত ও আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নত বাণিজ্য সম্পর্ককে উৎসাহিত করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “বিএনসিসিআই বাণিজ্য ও শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, আন্তর্জাতিক বাজার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলার কারিগর ও এমএসএমই-র জন্য সুযোগ তৈরির পথ অন্বেষণের লক্ষ্যে ব্রিটেনে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।”
মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল (ব্রিটেন), পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিচালক ডঃ দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, বিএনসিসিআই-এর বৈদেশিক বাণিজ্য, শিল্প ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ঋত্বিক দাস, সাধু রাম-চাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ নূরুস সালাম, কে.সি. দাস প্রাইভেট লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ধীমান দাস, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ সচিব হরিহর প্রসাদ মণ্ডল, বিএনসিসিআই-এর কোষাধ্যক্ষ অলোক সরকার এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
