সিবিআইয়ের সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ। তাই সুপ্রিম কোর্টের আদেশানুসারে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির জামিনে আরও কোনও বাধা রইল না। অবশেষে জেল থেকে মুক্তি পাবেন পার্থ। তাঁর সঙ্গেই মুক্তি পেতে চলেছেন এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কার সংক্রান্ত ইডির মামলায় গত জানুয়ারি মাসেই জামিন পেয়েছিলেন পার্থ। এ বার সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেলেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের কয়েক মাস আগেই বলে দিয়েছিল, সিবিআইয়ের মামলায় বিচারপর্ব শুরু হলেই পার্থ, সুবীরেশ এবং এসএসসি-র উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করা যাবে। ১৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে চূড়ান্ত জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরেই মামলার চার্জ গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেন আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালত। আট জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে সিদ্ধান্ত হয়। সিবিআই সাক্ষীদের নাম প্রস্তাব করে। সেই অনুয়ায়ী, সোমবার অষ্টম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। গত দু’মাস ধরে এই সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব চলছিল। সাক্ষী ছিলেন এসএসসির প্রোগ্রাম অফিসার তপোজ্যোতি বসু।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বর্তমানে ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সূত্রের খবর, ভার্চুয়াল মাধ্যমে তিনি শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন। জামিনের শর্ত হিসেবে, পার্থকে নিয়মিত হাজিরা দিতে হবে, পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে, কোনওভাবেই এলাকা ছাড়তে পারবেন না। এছাড়াও ৯০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে।
ইডি মামলায় পার্থের জামিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যে সমস্ত নীচুতলার কর্মী, আধিকারিকরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁরা বেশিরভাগই জামিন পেয়েছেন। এক ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন এ ভাবে জেলে রাখা সম্ভব নয়। একই কারণে ইডির মামলায় জামিন পেয়েছিলেন পার্থ চ্যাটার্জি। ফলে সিবিআই মামলায় পার্থও জামিন পেতে পারেন। শর্ত সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি এনকে সিংয়ের বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থ চ্যাটার্জির বাড়িতে রাতভর তল্লাশি চালায় ইডি আধিকারিকরা। এরপর ২৩ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর সিবিআই পার্থকে শ্যোন অ্যারেস্ট করে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে একাধিকবার জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যে, শর্তসাপেক্ষে জামিন পেতে পারেন পার্থ। অবশেষে জামিন পেলেন তিনি। বাড়ি ফিরবেন পার্থ।
