আজকাল ওয়েবডেস্ক: একের পর এক বিস্কুটের পেটি। খুলেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। ভিতরে সাজানো তাড়া তাড়া নোট। কোনোটা ৫০০ টাকার আবার কোনোটা ১০০ টাকার। ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগণার সন্দেশখালির ২ নম্বর ব্লকের ধামাখালি এলাকার একটি গেস্ট হাউস। শুক্রবার যেখানে হানা দিয়ে কয়েক কোটি টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ১৮টি পেটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১০ কোটি টাকারও বেশি জাল নোট। ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার দুই যুবককে। এদের মধ্যে সিরাজ উদ্দিন মোল্লার বাড়ি জীবনতলায় এবং দেবব্রত চক্রবর্তীর বাড়ি মহেশতলা এলাকায়। দুজনকেই শনিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে। যে গেস্ট হাউস থেকে এদেরকে ধরা হয়েছে তার মালিক বাপ্পাদিত্য মণ্ডল ঘটনার পরপরই পলাতক বলে জানা গিয়েছে। তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গেস্ট হাউসে মাঝেমাঝেই অসামাজিক কাজ হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে এলাকার লোকের খুব একটা সুনজরে ওই গেস্ট হাউসটি নেই। ওইদিন স্থানীয়রা দেখতে পান গেস্ট হাউসের সামনে দাঁড় করানো একটি গাড়ি থেকে একের পর এক বিস্কুটের পেটি নামিয়ে সেগুলো ভিতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যারা নামাচ্ছিল তাদের সতর্ক চোখমুখ দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। খবর যায় পুলিশের কাছে। স্থানীয় সন্দেশখালি থানার পুলিশ খবর পেয়ে এসে গেস্ট হাউসে শুরু করে তল্লাশি। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই তল্লাশি শুরু হলেও রাত পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। পুলিশ উদ্ধার করে ১৮টি পেটি থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি জাল নোট। গ্রেপ্তার করা হয় দুই অভিযুক্তকে। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সচরাচর এত টাকার জাল নোট একসঙ্গে উদ্ধারের নজির খুব একটা নেই। নোটগুলি এত যত্ন করে ছাপা যে চট করে কারুর সন্দেহ হবে না। অধিকাংশ নোটই ৫০০ টাকার।
আরও পড়ুন: বালেশ্বরের পর এবার পুরী, ফের নৃশংস ঘটনা, ১৫ বছরের কিশোরীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিল তিন দুষ্কৃতী
প্রাথমিক জেরায় দুই অভিযুক্ত জানায় তাদের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগণায়। এই গেস্ট হাউসটি যেখানে সেখান থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত খুব একটা দূরে নয়। যা আলাদা করে ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশকে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই বিপুল পরিমাণ জালনোট একসঙ্গে নিয়ে আসার পিছনে তাদের সন্দেহ, নোটগুলি এখান থেকে হাতবদল হয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ত। সেটা পশ্চিমবঙ্গের ভিতরেও হতে পারে আবার বাইরেও হতে পারে। এর আগে একাধিকবার সীমান্ত এলাকায় জালনোট পাচার করতে গিয়ে দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলির হাতে পাচারকারীরা ধরা পড়েছে। কিন্তু সীমান্তের এত কাছে এই জালনোট উদ্ধারের পিছনে আরেকটি যে বিষয় পুলিশকে ভাবাচ্ছে সেটা হল এর পিছনে কে রয়েছে? যেহেতু দুই অভিযুক্তই দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসিন্দা তাই তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে ওই জেলার পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ। বিশেষ করে এত পরিমাণ নোট কোথায় ছাপা হয়েছিল সেই বিষয়েও ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য সংগ্রহ করবে পুলিশ। এই টাকা উদ্ধার কাণ্ডের তদন্তভার শেষপর্যন্ত তুলে দেওয়া হল রাজ্যের সিআইডির হাতে। এদিন পাঁচ সদস্যের সিআইডির একটি প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি থানায় এসে পৌঁছয়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে।
