আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজোর আবহে চিকিৎসকদের মিলবে না ছুটি। শারদ উৎসবের ছুটিতে প্রতিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র সহ হাসপাতালগুলিতে, জেলা সহ শহর কলকাতার প্রতিটি জায়গায়, চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুপস্থিতিতে কোনও অবস্থায় যদি প্রসূতি মা ও সদ্যোজাত শিশুদের কোনওরকম বড় কোনও ঘটনা বা মৃত্যু ঘটে, তাহলে সেই ঘটনা রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তর বরদাস্ত করবে না। এমনটাই জানিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে নোটিশ জারি করা হল।

 

পুজোর ঠিক তিন সপ্তাহ আগেই স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে জারি করা হয়েছে ১১ দফা নির্দেশিকা। পুজোর সময় হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির জেরে যদি শিশু ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়, চিকিৎসায় গাফিলতি হয়, তাহলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে। চিকিৎসায় গাফিলতি বরদাস্ত করবে না স্বাস্থ্য দপ্তর। দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তির খাড়া নেমে আসতে পারে চিকিৎসকদের উপরে। 

 

রাজ্যের প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিগত কয়েক বছর থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ১১ দফা গাইড লাইন জারি করল স্বাস্থ্য দপ্তর। পুজোর মরশুমে হাসপাতালে শিশু ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের উপস্থিত থাকতেই হবে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে এবং চিকিৎসায় গাফিলতির ফল হিসাবে প্রসূতি মা ও শিশুর মৃত্যু হবে, এমনটা যেন আর না হয়। দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তির খাড়া নেমে আসতে পারে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদের উপরেও। 

 

আরও পড়ুন: খেলতে খেলতে বুকে ব্যথা, মায়ের কোলে মাথা রেখে বিশ্রাম নিচ্ছিল ১০ বছরের নাবালক, মুহূর্তের মধ্যে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ

 

কী বলা হল নির্দেশিকায়: 

 

১.বিশেষজ্ঞের মতামত দিতে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে শারীরিক ২৪ ঘণ্টা উপস্থিতি দেখাতে হবে সহকারী অধ্যাপক পদ মর্যাদার একজন চিকিৎসককে। জেলা হাসপাতালগুলিতে উপস্থিত থাকতে হবে সিনিয়র স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে।

 

২. সিজার অপারেশনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে উপস্থিত থাকতে হবে। জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে মেডিক্যাল অফিসারের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

 

৩.পুজোর সময় স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, অ্যানেসথেসিওলজি কোন কোন চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের নাম, মোবাইল নম্বর সহ আগাম দুই মাসের ডিউটি রোস্টার জমা দিতে হবে স্বাস্থ্য ভবনকে।

 

৪. হাসপাতলে পিপিপি মোডে চলা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলি ২৪ ঘন্টা খোলা রাখতে হবে। 

 

৫. জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কন্ট্রোল রুম থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখবেন।

 

৬. শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিয়ত এস এন সি ইউ-তে নজর রাখতে হবে।

 

৭.পুজোর সময় অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।

 

৪. পুজোতে ও খোলা থাকবে ব্লাড ব্যাঙ্ক। যাতে প্রয়োজনে রক্তের সংকট মেটানো যায়। 

 

৯. জীবনদায়ী ওষুধ, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের যোগান রাখতে হবে রোজ।

 

১০. প্রয়োজনে হাসপাতালের উপাধ্যক্ষরা সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন পুজোর আবহে।

 

১১. অন কল রেসপন্স, প্রয়োজনে চিকিৎসকদের ১০ মিনিটে হাজির হতে হবে। ঘোষিত ছুটি থাকলেও নিজের এলাকা ছেড়ে ঘুরতে বিদেশ ভ্রমণে যেতে পারবেন না স্ত্রী ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এবং অ্যানেসথেসিওলজিস্টরা।

 

যদি নির্দেশিকা জারি করার পরেও অনিয়ম দেখা যায়, তাহলে শাস্তির খাড়া নেমে আসতে পারে চিকিৎসকদের উপর।