আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোনারপুরের ঘাসিয়াড়ায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল দুই কিশোর। মৃতরা হল, এলাকারই বাসিন্দা দেবকুমার ও সাগর সরকার (১৬)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বাবার সঙ্গে শেষবার কথা হয়েছিল সাগরের। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ি ফেরার কথা জানিয়েই ব্যাডমিন্টন খেলতে বেরিয়েছিল তারা। এরপর বাবা ঘুমিয়ে পড়লে, সকালে উঠে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি প্রাইভেট গাড়ি সোনারপুরের দিক থেকে তেমাথার দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছিল বলে দাবি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি লাইট পোস্টে ধাক্কা মারে। তারপর সোজা গিয়ে ঢুকে পড়ে রাস্তার ধারের দোকান ঘরে। সংঘর্ষের জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই কিশোরের।
দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন গাড়ির চালকও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ এবং কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই রাস্তায় প্রায়ই দ্রুতগতির গাড়ির দৌরাত্ম্য দেখা যায়। ঘটনার পর এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে শোকের ছায়া।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে আরও এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল বাংলায়। সরস্বতী পুজোয় আনন্দ করতে চার বন্ধু এক সঙ্গে বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বার হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের আর বাড়ি ফেরা হল না। মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল চারজনেরই। ঘটনাটি ঘটে নদীয়ার তেহট্ট থানার কানাইখালি বাজারে। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঠিক কি কারণে এই দুর্ঘটনাটি তাঁর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মেরেছিল বাইকটি। অনেকের অভিযোগ ট্রাকের ধাক্কায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। রাস্তায় ওই চার যুবকের দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তেহট্ট থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে চারজনকেই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে দু'জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। বাকি দু'জনের অবস্থা আশঙ্কজনক হওয়ার কারণে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই আজ সকালে দুই ছাত্র মারা যান।
এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসে দুর্গা প্রতিমা আনার সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এক গাড়ি। মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। গুরুতর আহত আরও তিন জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার গভীর রাতে হুগলির পোলবা থানার অন্তর্গত অনন্তপুর এলাকায়। মৃত তিন জনের নাম ভাস্কর দেবধারা (২৯)। বাড়ি সুগন্ধার শঙ্করবাটি এলাকায়। প্রীতম চক্রবর্তী (৩০) ও স্বপন দে (৪০)। এই দু’জনের বাড়ি চন্দননগর কাঁটাপুকুর এলাকায়। জানা গেছে, পোলবার শঙ্করবাটি হাইস্কুল লাগোয়া মাঠে দুর্গাপুজো হয়। ঘটনার দিন রাতে চন্দননগর পটুয়াপাড়া থেকে ঠাকুর আনতে গিয়েছিল পোলবার শঙ্করবাটি গ্রামের বারোয়ারীর সদস্যরা। জানা গেছে, ঠাকুরের গাড়ি গ্রামে পৌঁছে গেলেও পিছনে থাকা চার চাকা গাড়িটি পৌঁছতে দেরি হতে থাকে। গাড়িতে ছিলেন চালক সহ পুজো আয়োজকদের ছয় জন। পুজো কমিটির এক সদস্য জানান, অনেক দেরি হতে দেখে তাঁরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। চার চাকা গাড়ি কেন ফিরছে না দেখে ওই গাড়িতে থাকা এক জনকে ফোন করা হয়। পুলিশ ফোন ধরে জানায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। কমিটির সদস্যরা সেখানে পৌঁছন। আহতদের উদ্ধার করে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গেছে, শুক্রবার গভীর রাতে চন্দননগর রেল ওভার ব্রীজ থেকে নামার সময় রাস্তার পাশে থাকা ইটের পাঁজায় সজোরে ধাক্কা মারে চার চাকা গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’ জনের। বাকি চার জন টুকুন বাউলদাস, স্বপন মাইতি, সোমনাথ দেব ধারা সহ আরও একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বাকি দু’জনের চিকিৎসা চলছে চুঁচুড়ায়।
