আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের সংবাদ শিরোণামে ভাঙড়। এই প্রথম নয়, নির্বাচন কিংবা নির্বাচন প্রাক্কাল, নানা সময়ে বারেবারে অশান্ত হয়েছে এই এলাকা। ফের একই ঘটনা। অশান্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। এবার তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। মৃত ব্যক্তির নাম রাজ্জাক খাঁ। 

১০ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারের কাছে ওই তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এরপর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষনা করা হয় বলে খবর। ঘটনার জেরে আতঙ্ক এলাকায়। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

রাজ্জাক খাঁ তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সক্রিয় নেতা। তিনি ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ বলেও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এই হামলা হয়েছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা দোষীদের গ্রেপ্তারির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রাতেই। তৃণমূলের একাংশের দাবি এটি পরিকল্পিত হামলা। ভাঙড় থেকে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 

প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ রাউন্ড গুলি করা হয়। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে একাধিকবার কোপানো হয় তাঁকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশ ইতিমধ্যেই দু’জন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে। দেহটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।

রাজ্জাক খাঁ দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দলের সংগঠনের হয়ে কাজ করতেন। তৃণমূলের বিধানসভা কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। তাঁর জনপ্রিয়তাই এই হামলার পেছনের অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। 

অন্যদিকে পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ বাহিনী। সরাসরি আইএসএফ বিধায়কের নাম নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, 'নওশাদ সিদ্দিকীর মদতে খুন করা হয়েছে। এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্যই পরিকল্পিত খুন। বিকেল থেকে দুটি মিটিং শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন রাজ্জাক। তাঁকে প্রথমে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। আসলে ভাঙড় এলাকায় তাঁদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে এইসব কাজ করছে। পুলিশকে বলব, অবিলম্বে এই সমাজবিরোধীদের গ্রেফতার করতে হবে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।' যদিও তৃণমূলের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে আইএসএফ। পাল্টা অভিযোগ এনে তারা জানিয়েছে, 'এটি সম্পূর্ণরূপে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। নিজেদের দলের নেতাকে নিজেরাই খুন করে এখন আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।'

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে বসিরহাটে। ভরা বাজারের মাঝে জনসনক্ষে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় ২৪ বছর বয়সি তৃণমূল কর্মী আনার হোসেন গাজিকে। বাইকে বসে চা খাওয়ার সময়ই তাঁকে টার্গেট করে গুলি চালায় একদল দুষ্কৃতী। পরপর তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ার পর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েও মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ফের নিশানায় শাসক দলের নেতা।