আজকাল ওয়েবডেস্ক: নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন করে খুন করা হয়। মাত্র ২১ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করল ফরাক্কা থানার পুলিশ। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থানার ঘটনা। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, গোটা ঘটনার তদন্ত করে দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আজকের দিনে চার্জশিট জমা করা হচ্ছে।

 

 

গত ১৩ অক্টোবর বাড়ির সামনে খেলা করার সময় হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় বছর দশকের এক নাবালিকা। এর প্রায় তিন ঘন্টা বাদে দীনবন্ধু হালদার নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ওই নাবালিকার বস্তাবন্দী দেহ। নাবালিকার দেহ উদ্ধারের পর উত্তেজিত জনতা দীনবন্ধুকে ব্যাপক মারধর করে। হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ফরাক্কা থানার পুলিশ দীনবন্ধুকে খুন, তথ্য প্রমাণ লোপাট এবং পকসো আইনের ছয় নম্বর ধারায় অভিযুক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করে। দীনবন্ধু পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে নাবালিকা খুনের ঘটনায় শুভ হালদার নামে আরও এক যুবক জড়িত ছিল। গত ১৯ অক্টোবর পুলিশ তাকেও বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। ধৃত শুভর বিরুদ্ধেও একই ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। 

 

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুনের মামলায় অভিযুক্ত দীনবন্ধু এবং শুভর বয়সের ব্যবধান যথেষ্ট হলেও তারা দিনের বেশিরভাগ সময় একই সাথে থাকত এবং নেশা করত। ওই নাবালিকাকে খুন এবং তার উপর যৌন নির্যাতন চালাতে দীনবন্ধুকে শুভ সাহায্য করেছিল বলে অভিযোগ।নাবালিকার মৃত্যুর পর দেহটি বস্তাবন্দি করতেও শুভ, দীনবন্ধুকে সাহায্য করেছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। 

 

 

এই খুনের ঘটনার পরই জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায়ের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। এই দলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসডিপিও (ফরাক্কা), ফরাক্কা থানার আইসি সহ বিভিন্ন স্তরের শীর্ষ পদাধিকারীরা ছিলেন। গত ২১ দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে পুলিশ চার্জশিট জমা করেছে। 

 

 

 

জঙ্গিপুর আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার খুনের মামলায় দুই অভিযুক্তকে ফের আদালতে হাজির করা হবে। সেখানেই তাদের হাতে চার্জশিটের কপি তুলে দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই খুনের মামলায় যুক্ত দুই অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়ে তারা আদালতে আবেদন জানাবেন। গোটা ঘটনার তদন্তে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার আধিকারিকেরা একাধিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করার পাশাপাশি, ফরেন্সিক সাইন্স ল্যাবরেটরির 'টুল কিট' ব্যবহার করেছেন। এর পাশাপাশি ঘটনাস্থলের 'ডিজিটাল ম্যাপিং' করা হয়েছে পুলিশদের তরফ থেকে। কীভাবে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলে এসেছিল এবং কীভাবে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় তার 'ডিজিটাল ম্যাপিং' কোর্টে জমা করতে চলেছে পুলিশ। এই মামলায় ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিভাস চ্যাটার্জিকে বিশেষ সরকারি আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।