আজকাল ওয়েবডেস্ক: টেলিমেডিসিনে ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ ও নতুন মেডিকেল ভ্যান পরিষেবা বদলে দিচ্ছে গ্রামের স্বাস্থ্যচিত্র। এই পরিষেবার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের এক অনুষ্ঠান থেকে গত শনিবার। সোমবার তার বাস্তব চিত্র সমাজমাধ্যমে টুইট করে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও এক ঐতিহাসিক সাফল্যের সাক্ষী হল।
মমতা টুইটে জানান, “রাজ্য সরকারের অত্যাধুনিক টেলিমেডিসিন উদ্যোগ #SwasthyaIngit আজ অতিক্রম করল ৭ কোটিরও বেশি টেলিপরামর্শের নয়া রেকর্ড। যা দেশের মধ্যে নজিরবিহীন। এছড়াও দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার অসংখ্য মানুষের কাছে উচ্চতর চিকিৎসাকে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ এখন রাজ্যের প্রধান শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন ১১ হাজারেরও বেশি হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার এবং ৬৩টি হাব থেকে টেলিপরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে প্রতিদিন ৮০ হাজারেরও বেশি রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন এবং এতে যুক্ত রয়েছেন নয় হাজারেরও বেশি চিকিত্সক। যা পশ্চিমবঙ্গকে স্বাস্থ্যসেবার সহজলভ্যতায় আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।”
প্রত্যন্তে চিকিৎসার নতুন অধ্যায় মাঠে নামল আধুনিক মেডিকেল ভ্যান
গ্রাম ও পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা দূরবর্তী অঞ্চলে দ্রুত চিকিৎসা পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার চালু করেছে প্রায় ১০০টি অত্যাধুনিক মেডিকেল ভ্যান। আগামী দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এই মোবাইল মেডিকেল ভ্যানগুলিতে থাকবে আধুনিক রক্ত পরীক্ষার সুবিধা। এছাড়াও এক্স-রে, ইসিজি, ইউএসজি এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক ডায়াগনস্টিক পরিষেবা। মোবাইল ভ্যানগুলিতে থাকবেন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের টিম।
উদ্দেশ্য একটাই কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে যেন কোনও মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে অবহেলার শিকার না হন। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জানায়, প্রতিটি জেলায় প্রত্যন্ত এলাকাগুলোকে বিশেষ নজরে রেখেই এই পরিষেবা শুরু করা হয়েছে।
এই পরিষেবার পরিকল্পনার কথা গত শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন। আজ সেই পরিষেবা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে বিস্তারিত জানিয়ে টুইট করেন।
এই উদ্যোগ নিয়ে আজকাল ডট ইন-কে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি তথা প্রখ্যাত চিকিৎসক অঞ্জন অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কথা দিয়েছিলেন, তিনি তা রেখেছেন। রাজ্যের মানুষের জন্য এটি এক অভিভাবকসম ও অনন্য স্বাস্থ্যসেবা। এই ব্যবস্থা সাধারণ মানুষ থেকে সমাজের প্রতিটি স্তরের জন্য এক মাইলস্টোন প্রমাণিত হবে। সিনিয়র ডাক্তার থেকে জুনিয়র ডাক্তার সবাই এর সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। একদিকে, হেল্পলাইন চিকিৎসা নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। অন্যদিকে, মেডিকেল ভ্যান আপৎকালীন পরিষেবায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মানুষের জীবন রক্ষায় এটি অসাধারণ ভূমিকা নেবে, আর তা সম্ভব হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই।”
স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিশা
টেলিমেডিসিনের ব্যাপক বিস্তার ও অত্যাধুনিক মেডিকেল ভ্যান দু’টি উদ্যোগই প্রমাণ করছে যে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মানুষকেন্দ্রিক, আধুনিক ও দ্রুত পরিষেবার দিকে শক্তপোক্তভাবে এগোচ্ছে। গ্রাম-শহরের ব্যবধান কমে আসছে, আর প্রতিটি নাগরিকের কাছে চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য আরও এক ধাপ এগোল।
