আজকাল ওয়েবডেস্ক: তামিলনাড়ুতে পরিযায়ী শ্রমিক বিমল সাঁতরার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজার পারদ চড়ছে। মৃতের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের নবগ্রামের উড়িষ্যা পাড়ায়। শনিবার প্রশাসনের উদ্যোগে বিমল সাঁতরার মৃতদেহ তাঁর বাড়িতে পৌঁছায়। এরপরই সেখানে যান রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁরা বিমল সাঁতরার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সমবেদনা জানান। এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “এসআইআরের আতঙ্কে আরও একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল। এর জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন।” তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “বিমল সাঁতরা এসআইআরের আতঙ্কে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।”
উল্লেখ্য, মৃত বিমল সাঁতরা ধান রোয়ারের কাজ করতে তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি বিষ পান করে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পর বিরোধীরা তৃণমূলের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে পাল্টা আক্রমণ করেছে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নবগ্রামে।
প্রসঙ্গত, ৪ নভেম্বরই এসআইআর প্রসঙ্গে কলকাতায় মিছিলের ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে, মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। সঙ্গে পা মেলাবেন অভিষেক ব্যানার্জিও।
তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার সময়ে রেড রোডে বিআর আম্বেদকরের মূর্তির সামনে কলকাতা সহ জেলার নেতা-কর্মীদের জমায়েত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুপুর আড়াইটে থেকে শুরু হবে মিছিল।
আম্বেদকর মূর্তির সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে পৌঁছবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত। উল্লেখ্য, শুক্রবার দলের কর্মীদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন অভিষেক।
তিনি জানান, ৪ নভেম্বর থেকেই এক মাস এসআইআর ক্যাম্প চালাবে তৃণমূল। পাশাপাশি, বুথ ভিত্তিক এজেন্ট (বিএলএ)-দের তাঁর নির্দেশ, এনুমারেশন ফর্মের কাজ করার সময় এক মিনিটও বিএলও-দের একা ছাড়া যাবে না।
সব সময় ছায়ার মতো তাঁদের সঙ্গে লেগে থাকতে হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠকে অভিষেক রাজ্য জুড়ে ৬২০০টি ক্যাম্প চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ৪ নভেম্বর থেকে শুরু ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ধাপে ধাপে ক্যাম্পগুলি চালানো হবে।
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে হেল্পডেস্ক চালু করছে তৃণমূল। সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৬২০০ হেল্পডেস্ক কাজ করবে। এসআইআর সংক্রান্ত জনতার সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে এসব হেল্প ডেস্ক।
এর পাশাপাশি অভিষেক দলের সব কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই ছয় মাস আমাদের অ্যাসিড টেস্ট। এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে সকল ভোটারের নাম তুলতে হবে। কারও নাম যেন বাদ না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।’
বুথ ভিত্তিক এজেন্টদের উদ্দেশ্যে তাঁর নির্দেশ, এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন বিএলও-দের ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকতে হবে। এক মিনিটও তাঁদের একা ছাড়বেন না। কোনও বিএলও যেন অনৈতিক কাজ না করতে পারেন, তা দেখার দায়িত্ব বিএলএ-দের।
দলীয় সূত্রে খবর, দলের সাংসদ এবং বিধায়কদের ওয়ার রুম তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। ২৯৪টি বিধানসভার প্রতিটিতে একটি করে ওয়ার রুম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার রুমে ১৫ জন করে থাকবেন।
