আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআর আতঙ্কে স্ট্রোক। বিছানায় শয্যাশায়ী কালনার মহাপ্রভু পাড়া এলাকার এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে কালনার মহাপ্রভু পাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন ক্ষিতীশ শর্মা। এসআইআরে ২০০২ সালের তালিকায় নাম নেই তাঁর। একইসঙ্গে তাঁর বাবা-মা ছোটবেলায় মারা যাওয়ায় তাঁদেরও নাম পাচ্ছেন না তিনি। সেই আতঙ্ক থেকেই গাড়ি চালানো অবস্থায় তাঁর স্ট্রোক হয়ে যায়।
কোনক্রমে একজনের সহযোগিতায় সেদিন বাড়ি ফেরেন তিনি। তারপরের দিনই ভর্তি হন কালনা হসপিটালে। বর্তমানে শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভাল হলেও তাঁকে পুরোপুরি মাস দেড়েকের জন্য বেড রেস্টে থাকতে বলেছেন চিকিৎসকরা। এরপরই ওই ব্যক্তির মেয়ে স্থানীয় এলাকার কাউন্সিলর তথা কালনা পুরসভার উপ পুরপতি তপন পড়েলকে সঙ্গে নিয়ে কালনা এক নম্বর ব্লক বিডিও অফিসের দারস্থ হন শনিবার বিকালে।
এসআইআর আতঙ্কে বাবার স্ট্রোক হয়েছে,। একমাত্র রোজগারে তিনিই। সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তাঁর মেয়ে। অসুস্থ ওই ব্যক্তি বলেন, ছোটবেলায় বাবা-মা মারা যায়। বাড়ির মেয়েদের কী হবে? এই নিয়ে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। যার কারণেই এই অসুস্থতা। বর্তমানে শয্যাশায়ী তিনি। তাঁর স্ত্রীও এদিন সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
বিহারের পর বাংলাতেও চালু হয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর প্রক্রিয়া। যার জেরে অনেকের মধ্যেই আতঙ্ক লক্ষ্য করা গিয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে কয়েকটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, এসআইআর-এর কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
এসআইআর আতঙ্কে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে আগরপাড়ায়। প্রদীপ করের মৃত্যুতে প্রতিবেশীরা দাবি করেছিলেন, তাঁর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। তবুও তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। তাই নিজেকে শেষ করে দেন। গত বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের জয়পুর এলাকার যুবক সফিকুল গাজি (৩৫) এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। তাঁরা স্ত্রী জানান, গত কয়েক দিন ধরে আতঙ্কে ছিলেন স্বামী। বার বার বলছিলেন, তাঁর কোনও পরিচয়পত্র নেই। ভাই-বাপ কেউ নেই। স্ত্রী বার বার অভয় দেওয়ার চেষ্টা করলেও গত বুধবার সকালে তিনি নিজেকে শেষ করে দেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বহরমপুর থানার অন্তর্গত গান্ধী কলোনী এলাকায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন এক ব্যবসায়ী। সেক্ষেত্রেও পরিবাররে দাবি ছিল, আত্মহত্যার কারণ এসআইআর আতঙ্ক। ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় ‘দেশ ছাড়তে হবে’ এই আতঙ্কে গত ৪ নভেম্বর কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন মুর্শিদাবাদের কান্দির মোহন শেখ (৫৫)।
